নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে তামাকের দাম সবচেয়ে কম। তাই জনগণের কাছে তামাকজাত পণ্য খুবই সহজলভ্য। যার ফলে তামাক গ্রহণের হারও বেশি এবং তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে বছরে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের তামাক কর কাঠামো অনেক জটিল। গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত ব্র্যাক ইন সেন্টারে ‘দ্য ইকোনমিকস অব টোবাকো ট্যাক্সেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) উদ্যোগে এই গবেষণাটি করা হয়। গবেষণাতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০১০ ও ২০১৬ উপাত্ত ব্যবহার করে ডেটন মডেলের (২৯৯৭) সাহায্যে তৈরি করা হয় এই বিশ্লেষণমূলক গবেষণা প্রতিবেদনটি। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিআইজিডির অধ্যাপক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ।
গবেষণায় কর কাঠামো সহজ করা, তামাক নিয়ন্ত্রণে ট্যাক্স বেইজ বাড়ানো, সিগারেটের ক্ষেত্রে বর্তমান চার থেকে দুই স্তরে আনা এবং বিড়ির দুই স্তরের মধ্যে এক স্তরে আনাসহ আরও বেশকিছু সুপারিশ করা হয় এই গবেষণা প্রতিবেদনে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘তামাক কর নির্ধারণে স্তর কমানোর কথা আমি দীর্ঘদিন ধরে শুনছি। কিন্তু কেন জানি এটা কমানো সম্ভব হচ্ছে না। এর মানে নিশ্চয়ই এতে এমন কোনো শক্ত পর্যায় আছে, যেটাকে সরকার অতিক্রম করতে পারছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বিষয় বাজেটে যুক্ত করতে হলে অর্থমন্ত্রী সেটা করবেন। এটা তার কাজ। আপনাদের সম্মানে বার্তাটা আমি তার কাছে পৌঁছে দিতে পারি। তিনি নিজেও জানেন এ বিষয়ে। আমি আপনাদের পক্ষে তদবিরও করতে পারি, যতটুকু সম্ভব।’
প্রতিবেদনের অন্য সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে সব ধোঁয়াবিহীন তামাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনা, সব তামাকপণ্যের করের হারে সমতা আনা, সামগ্রিক তামাক কর নীতি প্রণয়ন করা, এনবিআরের আইনগত সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি, তামাক ব্যবসায়ীদের সম্মানসূচক পুরস্কার না দেয়া, তামাক কর থেকে আহরিত অর্থের একটি অংশ স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে ব্যয় করা প্রভৃতি।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিআইজিডির প্রফেসরিয়াল ফেলো ড. সুলতান হাফিজ রহমান।