কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত চার লেনের টানেলের একাংশ অক্টোবরের শেষ দিকে খুলে দেয়া হবে। সেই সঙ্গে ডিসেম্বরেই বঙ্গবন্ধু টানেলটি পুরোপুরি চালু করার লক্ষ্য রয়েছে। কিন্তু সংযোগ সড়কগুলোর অপ্রতুলতার কারণে টানেলের সুফল পাওয়া নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ শেষ না হলেও ফেব্রুয়ারিতে খুলে দেয়া হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের আট কিলোমিটার। সব সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হলেই টানেলের পুরো সুফল পাওয়া যাবে বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদ ও ব্যবসায়ীরা। এমতাবস্থায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নিমতলা পর্যন্ত যানজট কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
আউটার রিং রোডের আওতায় সাগরিকা পর্যন্ত ফিডার রোডটি রেললাইন জটিলতার কারণে চালু করা যাচ্ছে না। রাসমনি ঘাট থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত সড়কটি তিন কিলোমিটার অংশ দুই লেনের হওয়ায় যানজট সৃষ্টির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে চলমান রয়েছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ চলছে।
২০১৯ সালের জুনে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালে। তবে, টানেল চালু হওয়ার পর নগরীর যানজট নিরসন ও টানেলের ওপর চাপ কমাতে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে পতেঙ্গা থেকে নিমতলা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের আট কিলোমিটার অংশ খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, চট্টগ্রাম থেকে নিমতলা পর্যন্ত সরাসরি আসতেও পারবে আবার যেতেও পারবে। ফলে ব্যাপক একটা যানজট হবে তা নিরসনে বিকল্প সড়কগুলো খুলে দিচ্ছি।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পুরোপুরি চালু ও র্যাম্পগুলো কার্যকর না হলে টানেলের সুফল পাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার।
তিনি বলেন, কানেক্টিভিটি যেগুলো আছে সবই যদি চালু করা না হয় তাহলে আমরা টানেলের পর্যাপ্ত সুবিধা পাব না। বেশকিছু রাস্তাকে আটলেন, ছয়লেন, চারলেন করার কথা আছে সে কাজগুলো এখন পর্যন্ত কিন্তু সম্পন্ন করা হয়নি।
আর টানেলের পরিপূর্ণ সুফল পেতে ও কানেক্টিভিটি বাড়াতে সংযোগ সড়কগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করার কোনো বিকল্প নেই বলে জানান ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব।
তিনি বলেন, যে দ্রুত গতিতে টানেল প্রস্তুত করা হয়েছে ঠিক সেই একই গতিতে আমাদের সংযোগ সড়ক এগুলোর উন্নয়নে আমরা সমানতালে করতে পারিনি। যে কারণে পদ্মা সেতুর সঙ্গে সঙ্গে আমরা সুফলটা পেয়েছি একই ধরনের ফলাফল, সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া নিয়ে একটু সন্দিহান আমরা।
বঙ্গবন্ধু টানেলটির দৈর্ঘ্য তিন দশমিক চার কিলোমিটার। টানেলটিতে থাকছে দুটি টিউব, যেগুলো দিয়ে চলাচল করবে যানবাহন।