বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২৫ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

পরমাণু চুক্তির কিছু শর্ত থেকে সরে আসছে ইরান

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০১৯
  • ৩২৭ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, সিটিজেন নিউজ: ইরান ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির কয়েকটি শর্ত মানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। আর ইরানের এ সিদ্ধান্তের জবাবে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ।

বুধবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঘোষণায় একথা জানানো হয়।

বিভিন্ন বার্তা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে ডয়চে ভেলে জানায়, ২০১৫ সালে পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষরকারীদের একটি চিঠি পাঠানোর কথা জানিয়েছে ইরান। চিঠিতে ওই চুক্তির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে সরে যাওয়ার কথা বলেছে দেশটি।

ইরান বলছে, ২০১৫ সালে সম্পাদিত পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোকে জানানো হয়েছে যে, চুক্তিতে থাকা ‘স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিশ্রুতিগুলো’ না মানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে একটি যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী পাঠানোর পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে দেশটি৷ তেহরানকে ‘পরিষ্কার এবং সন্দেহাতীত’ বার্তা দিতে রণতরীর এ বহর পাঠানো হয়েছে বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

টেলিভিশনে দেয়া এক বক্তৃতায় ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, বিশ্বশক্তিগুলো যদি প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে তাহলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের প্রক্রিয়া আবার শুরু করবে ইরান।

পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে যারা এখনো চুক্তির পক্ষে রয়েছেন অর্থাৎ জার্মানি, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চীন এবং রাশিয়া ইরানের তেল এবং ব্যাংকিং খাত রক্ষায় তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে আর ৬০ দিন সময় পাবে।

সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এবং ভারী পানির মজুদ কমানো বন্ধ করবে দেশটি। নির্দিষ্ট কিছু পারমাণবিক চুল্লিতে পরমাণু বিদারণের জন্য এগুলো দরকার হয়।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চুক্তির ‘স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিশ্রুতিগুলো’ না মানার সিদ্ধান্তের কথা ইতোমধ্যে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে৷

প্রসঙ্গত, গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে একতরফাভাবে সরে যাওয়ার পরও সেটি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ইরান।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জেরিফ বলেছিলেন, ‘ইরানের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। এ চুক্তি থেকে সরে যাবে না ইসলামিক প্রজাতন্ত্র।’

কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসার কারণ হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য যেসব দেশ চুক্তির পক্ষে রয়েছে। তাদের সীমাবদ্ধতাকে দায়ী করেছে দেশটি। এসব দেশের মার্কিন চাপ এড়িয়ে চলার ক্ষমতা নেই বলে মনে করছে ইরান।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন পরমাণু চুক্তি বাতিলের পর দেশটির ওপর কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেছে। ইরানের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল রপ্তানি বন্ধ করে দেশটিকে চাপের মুখে ফেলার উদ্দেশ্যে এই অবরোধ দেয়া হয়েছে।

তেল কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থেকে কয়েকটি দেশকে ছয় মাসের জন্য অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পহেলা মে সেটাও বন্ধ করে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, কেউ ইরানের তেল কিনলে সে দেশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

উল্লেখ্য, ইরানের ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ। ব্রিটেন বলেছে, ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিলে তার পরিণতি ভালো হবে না। পশ্চিমা দেশগুলো সেক্ষেত্রে দেশটির ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে বলে জানিয়েছে লন্ডন।

জার্মানি অবশ্য পরমাণু চুক্তি টিকিয়ে রাখতে নিজ দেশ এবং ইউরোপের দেশগুলো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে বলে জানিয়ে ইরানকে চুক্তি মানার আহ্বান জানিয়েছে।

অন্যদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরানকে পরমাণু অস্ত্র বানানোর কোনো সুযোগ দেবে না দেশটি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com