অনলাইন ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: মায়েশা ইসলাম। বিয়ের পর থেকেই তার স্বামীকে সিগারেট ছাড়াতে চেষ্টা করে আসছেন। কিন্তু ছাড়াতে পারছেন না। পুরান ঢাকার বংশালের বাসিন্দা এই নারী এখন কিছু আশা দেখছেন, তার স্বামীকে সিগারেট ছাড়াতে পারবেন বলে।
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ার প্রস্তাব দেখে তার এই আশা। স্বামীকে এবার কড়া বার্তা দিলেন সিগারেট ছাড়ার। এতে স্বামীর কিছুটা সম্মতি দেখে তার মনে স্বস্তি।
মায়েশা বলছিলেন, সংসারে সিগারেটের বাড়তি খরচ কমাতে এবার স্বামীকে কড়া করে বলে দিয়েছি। তাকে এটা ছাড়তেই হবে। দাম আরও বাড়ালে আরও ভালো হতো।
সিগারেট, বিড়ি ও তামাকজাত পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাবকে মায়েশার মতো স্বাগত জানিয়েছেন অনেক নারী। তবে অনেক নারী আবার ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তারা বলছেন, শুধু দাম বাড়ালে হবে না। সিগারেটের উৎপাদন, বিপণন বন্ধ করতে হবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার জীবনের প্রথম বাজেট পেশ করেন বৃহস্পতিবার (১৩ জুন)। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের প্রথম এই বাজেটে সিগারেটের নিম্নস্তরের ১০ শলাকার দাম ৩৭ টাকা এবং ৫৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। মধ্যম স্তরের ১০ শলাকার দাম ৬৩ টাকা এবং ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের প্রস্তাব করা হয়েছে। উচ্চস্তরের ১০ শলাকার দাম ৯৩ টাকা ও ১২৩ টাকা এবং ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
যন্ত্রের সাহায্য ব্যতীত হাতে তৈরি ফিল্টারবিহীন বিড়ির ২৫ শলাকার দাম ১৪ টাকা এবং ৩৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফিল্টার সংযুক্ত বিড়ির ২০ শলাকার দাম ১৭ টাকা ও ৪০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিড়ি-সিগারেটের মতো ভয়াবহ আরেকটি পণ্য জর্দা ও গুল। এগুলোর ব্যবহার সরাসরি হওয়ায় শরীরের ওপর এর বিরূপ প্রভাবও বেশি। এর ব্যবহার কমানোর জন্য প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার দাম ৩০ টাকা ও ৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের দাম ১৫ টাকা এবং ৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণের জন্য বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে।
দেশের ৪৮তম এই বাজেটে সিগারেটের দাম নিয়ে ফেসবুকে এক মন্তব্যে রিতা জামান নামের এক নারী বলছিলেন, ‘খুশি হয়ে লাভ নেই, বন্ধ করলে ঠিক ছিল। কারণ, খোরেরা ঠিকই খাবে বরং সংসারে বাজে খরচ আরও বাড়লো।’
নওশিন ওয়াহেদ বলেছেন, আমি তো অনেক খুশি। কিন্তু সিগারেটের দাম বাড়ার থেকে বন্ধ করে দিলে বেশি খুশি হতাম।