বাংলাদেশের নির্বাচন ও মানবাধিকার নিয়ে নানা সবক দিলেও রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার নিয়ে গৎবাঁধা বক্তব্য দিলেন জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার। সফরের শেষদিন এক সংবাদ সম্মেলনে মিশেল ব্যাশেলে নিজেদের কোনো উদ্যোগের কথা না জানিয়েই প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে বসারও সবক দেন।
কয়েক দিন ধরে মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে বুধবার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলে। লিখিত বক্তব্য এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নে বারবার উঠে এসেছে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সত্যতার প্রশ্ন।
বাংলাদেশ নিয়ে ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গস্যানসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহলের সব অভিযোগ সত্য কি না, তা যাচাইয়ের প্রশ্নের জবাব সরাসরি না দিয়ে মিশেল মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব অভিযোগই খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেন। বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি অভিযোগে আন্তর্জাতিক মানের তদন্ত প্রয়োজন।
মিশেল ব্যাশেলে বলেন, গুমের অভিযোগগুলোতে তদন্তে অগ্রগতির অভাব এবং ন্যায়বিচার পেতে কিছু বাধা থাকায় এ বিষয়ে হতাশা তৈরি হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সুরাহা এবং বিচারিক সুরক্ষার বিষয়েও উদ্বেগ আছে। তাই এই প্রেক্ষাপটে সরকারকে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তদন্তে একটি বিশেষায়িত সংস্থা গঠনের প্রস্তাব করেছেন তিনি। প্রস্তাবিত ওই সংস্থায় ভুক্তভোগী, তাদের পরিবার এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে সংস্থাটি কীভাবে গঠিত হবে, সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়ার জন্য জাতিসংঘের দফতর তৈরি আছে বলেও তিনি জানান।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে কথা বলেন তিনি। দেশের সব রাজনৈতিক দলকে একত্রে বসে জাতীয় সংলাপের পরামর্শ তার। এতে দুর্নীতির ঝুঁকি কমবে এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রতিবন্ধকতাও কমাবে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন ও বিচার বিভাগসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা জরুরি বলেও মনে করেন তিনি। যদিও মিশেল ব্যাশেলে জানান, মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেকোনো অভিযোগের তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিশেল ব্যাশেলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।