বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১১:১৮ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

আজ বিশ্ব ক্যান্সার দিবস

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৭৯ বার পঠিত

৪ ফেব্রুয়ারি। আজকের দিনটিতে সারা বিশ্ব জুড়ে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালন করা হয়। ২০০৮ সালে প্রথম এই দিবস পালন শুরু করে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন এগেইনেস্ট ক্যান্সার কন্ট্রোল (ইউআইসিসি)।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বে প্রতিবছর ৮২ লাখ মানুষ ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করে। বিশেষ করে সাড়ে ১০ কোটি নারী ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। আশঙ্কাজনক খবর হলো, দ্বিতীয় এ মরণব্যাধিতে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের নাগরিক।

দেশে ক্যান্সার সংক্রমণের এমন পরিস্থিতিতে সারাবিশ্বের মতো আজ দেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস-২০২৩। দিবসটি উপলক্ষে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘আসুন ক্যান্সার সেবায় বৈষম্য দূর করি’।

সারাবিশ্বে এই দিনটি ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যান্সার কন্ট্রোল নামক একটি বেসরকারি সংস্থার নেতৃত্বে উদযাপন করা হয়, যা পূর্বে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন নামে পরিচিত ছিল। এই সংস্থার সদর দপ্তর জেনেভায় অবস্থিত, যার ১৭০টিরও বেশি দেশে প্রায় দুই হাজার সদস্য রয়েছে। দিবসটি উদযাপনের উদ্দেশ্য হলো মারাত্মক ও প্রাণঘাতী এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেয়া এবং এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের সাহায্য করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যান্সার একটি বড় রোগ, যার সময়মতো চিকিৎসা প্রয়োজন। প্রতিবছর বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে বিপুল সংখ্যক মানুষ এই মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারায়। একইসঙ্গে বাংলাদেশে ক্যান্সার ও এ রোগে মৃত্যুর হার বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সচেতনতা ও শিক্ষার অভাব এবং অর্থনৈতিক অবস্থাকে বিবেচনা করেন তারা।

চিকিৎসকরা মনে করেন, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারের রোগ তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে এবং সেক্ষেত্রে চিকিৎসা সহজ হয়। ক্যান্সারের লক্ষণগুলো নির্ভর করে ক্যান্সারটি কোথায়, এটি কতটা বড় এবং এটি কাছাকাছি কোনো অঙ্গ বা টিস্যুকে কতটা প্রভাবিত করে। ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়লে শরীরের বিভিন্ন স্থানে লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

তারা বলেন, ক্যান্সার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। এটা কী ধরনের রোগ, কী কী কারণে ঝুঁকি বাড়ে, প্রতিরোধের জন্য কী কী করণীয় সে বিষয়ে সচেতনতা জরুরি। ক্যান্সারের লক্ষণ বা উপসর্গ-

দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি
আপনি যদি দীর্ঘ সময় ধরে ক্লান্তিবোধ করেন বা অবসাদে ভোগেন, তবে সেটা অনেক রোগের কারণই হতে পারে এবং ক্যান্সারের কারণেও হতে পারে। মলাশয়ের ক্যান্সার (colon cancer) বা রক্তে ক্যান্সার (blood cancer) হলে সাধারণত এমন উপসর্গ দেখা যায়।

দ্রুত ওজন কমে যাওয়া
কোনো কারণ ছাড়া হঠাৎ করেই দ্রুতগতিতে যদি ওজন কমতে থাকে তবে তা চিন্তার বিষয়। কারণ, এটি ক্যান্সারের অন্যতম উপসর্গ।

দীর্ঘদিনের ব্যথা
কোনো কারণ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে শরীরের কোনো অংশে যদি ব্যথা হয় আর তাতে ওষুধেও যদি কাজ না করে, তাহলে বিষয়টি নিয়ে ভাবনার যথেষ্ট কারণ আছে। তবে শরীরের কোনো জায়গায় ব্যথা হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করছে রোগীর ব্রেইন টিউমার বা মলাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে কিনা।

অস্বাভাবিক মাংসপিণ্ড
শরীরের কোনো অংশে অস্বাভাবিক কোনো মাংসপিণ্ডের উপস্থিতি দেখা দিলে বা মাংস জমাট হলে কিংবা এ ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্যণীয় হলে ক্যান্সারের উপসর্গ হতে পারে। এসব বিষয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ঘন ঘন জ্বর
জ্বর যেকোনো রোগের উপসর্গ। শরীরে ক্যান্সার জেঁকে বসলে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এতে ঘন ঘন জ্বর হতে পারি। ব্ল্যাড ক্যান্সারে ঘন ঘন জ্বর হয়।

ত্বকে পরিবর্তন
ত্বকে অস্বাভাবিক পরিবর্তনই ক্যান্সার শনাক্ত করার সহজ উপায়। ত্বকে অতিরিক্ত তিল বা ফ্রিকেল অথবা আঁচিলের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। যদি আঁচিলের রং, আকারে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

দীর্ঘস্থায়ী কাশি
ওষুধ খাবার পরও কাশি না ভালো হলে বা কাশির কারণে বুক, পিঠ বা কাঁধে ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সামান্য কাশি ভেবে একেবারেই ফেলে রাখা ঠিক নয়।

মল-মূত্র ত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন
যদি ঘন ঘন মল-মূত্রের বেগ অনুভব হয় তাহলে ক্যান্সার নিয়ে ভাবনার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ঘন ঘন ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যও মলাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণ। মূত্রত্যাগের সময় অন্ত্রে ব্যথা বা রক্তক্ষরণ মূত্রথলির ক্যান্সারের উপসর্গ।

অকারণে রক্তক্ষরণ
কাশির সময় যদি রক্তক্ষরণ হয় তাহলে এটি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারি। এছাড়া জনিপথ বা মলদ্বার থেকে রক্তক্ষরণসহ এ ধরনের অন্যান্য অস্বাভাবিকতাও ক্যান্সারের উপসর্গ।

খাবারে অনিচ্ছা
নিয়মিত বদহজম পেট, কণ্ঠনালী বা গলার ক্যান্সার নিয়ে চিন্তার কারণ রয়েছে। সাধারণত এসব উপসর্গকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় না। তবে এড়িয়ে যেতে নেই।

অন্যান্য উপসর্গ
এগুলো ছাড়াও ক্যান্সারের আরো বিভিন্ন লক্ষ্য দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে রয়েছে- পা ফুলে যাওয়া, শরীরের আকারে অস্বাভাবিক পরিবর্তন হওয়া ইত্যাদি।

তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করতে পারলে বেশিরভাগ ক্যান্সারেরই চিকিৎসা ও নিরাময় সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ক্যান্সারে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। যে বিষয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে, যেমন- সিগারেট, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত ওজন এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিতে হবে।

এছাড়া স্বাস্থ্যকর একটি জীবনযাপন প্রক্রিয়া বেছে নিতে হবে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়ানো ক্ষেত্রে ভালো পথ। কারণ, গবেষকেরা বলছেন, পৃথিবীতে অন্তত ২০০ ধরনের ক্যান্সার রয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলোই রয়েছে যেগুলো আক্রান্ত হওয়ার পর মানুষের সুস্থ হওয়ার হার অনেক বেশি, যেমন- স্তন ক্যান্সার ও প্রোস্টেট ক্যান্সার। ফলে অবহেলা না ভয় না পেয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com