রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১০:০০ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

বৃষ্টির পানিতেই ২৫ হাজার মানুষের স্বস্তি

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৪২ বার পঠিত

বৃষ্টির পানি ট্যাংকে ধরে রেখে সুপেয় পানি পানের সুযোগ পেয়েছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার প্রায় ৮ হাজার পরিবারের ২৫ হাজার মানুষ। এ পানি খাওয়া ও রান্নার কাজে ব্যবহার করছেন গৃহবধূরা। এতে পুকুর বা নলকূপ থেকে পানি বহন করে আনার কষ্ট লাঘব হয়েছে। তাদের জীবন সহজ করে দিয়েছে বৃষ্টির পানি।

সম্প্রতি টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৫ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৭ হাজার ৮৬৫ টি রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং ট্যাংক স্থাপন করে দিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

উপকূলীয় জেলা সমূহে সুপেয় পানির অভাব দূর করতে রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং প্রকল্পের আওতায় ৩ হাজার লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্যাংক স্থাপন করে দেওয়া হয়েছে। প্রতি পরিবারের কাছ থেকে পানির ট্যাংক স্থাপন বাবদ সরকার নির্ধারিত সহায়ক চাঁদা হিসেবে নেয়া হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৫ শ টাকা। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কার্যালয়ে থেকে এসব তথ্য জানাগেছে।

জানা গেছে, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার বেশিরভাগ স্থানে গভীর নলকূপ স্থাপন করা যায় না। অন্যদিকে, নলকূপের পানি লবণাক্ত ও আর্সেনিক যুক্ত। তাই সুপেয় পানির সংকট দূর করতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে পানির ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে।

উপকারভোগী কুশলী ইউনিয়নের গৃহবধূ আলেয়া বেগম বলেন, আমাদের এতো টাকা নেই, যে পানি কিনে খাবো। তাই দূর থেকে পানি বহন করে এনে তারপর পান করতে হতো। আর নলকূপ বা পুকুরের পানি দিয়ে রান্না করতাম। এতে আমাদের কষ্টের সীমা ছিলো না। সরকার থেকে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ট্যাংক দেয়ায় খুব উপকার হয়েছে।

বর্নি ইউনিয়নের ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা খালেদা খাতুন বলেন, এতো বড় পানির ট্যাংক পেয়ে আমরা খুবই খুশি। বৃষ্টি হলে পানি ট্যাংকিতে গিয়ে পরিষ্কার পানি জমা হয়। এ পানি দিয়েই চলে খাওয়া ও রান্না সহ এ সংশ্লিষ্ট সব কাজ।

গিমাডাঙ্গা গ্রামের মহিব বিশ্বাস বলেন, বৃষ্টির পানি ট্যাংকে ধরে রাখায় আমাদের সুপেয় পানির অভাব দূর হয়েছে। ট্যাপ ঘোরালেই পানি পড়ছে। আর ধরে রাখা পানিতে কোনো গন্ধ নেই। এতো কম খরচে এই সুবিধা পাবো কখনো কল্পনাও করিনি।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, বৃষ্টির পানি পান করলে শরীরে জমে থাকার টক্সিন বের হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতি ও রক্তের পিএইচ স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসে। ফলে শরীরে অ্যাসিডিটির মাত্রা কমে গিয়ে রোগের প্রকোপ কমে আসে। বৃষ্টির পানিতে আছে অ্যালকালাইন উপাদান। যা পিএইচ ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রুখে দেয়। তাই বৃষ্টির পানি শরীরের জন্য খুব উপকারী।

টুঙ্গিপাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপসহকারী প্রকৌশলী প্রদীপ মজুমদার বলেন, বৃষ্টি হলেই ঘরের চালের নিচে বসানো পাইপ থেকে পানি ফিল্টারে যায়। তখন ফিল্টার থেকে ভালো পানি ট্যাংকের ভেতরে গিয়ে পড়ে। আর ময়লাযুক্ত পানি ওয়াস আউটের মাধ্যমে বাইরে পড়ে যায়। ট্যাংকে থাকা ট্যাপ ঘোড়ালেই পানি মেলে। কোনো ঝামেলা ছাড়াই সুপেয় পানি পাচ্ছে ৭ হাজার ৮৬৫ পরিবারের অন্তত ২৫ হাজার মানুষ। এই পানি দিয়েই খাওয়া ও রান্না সহ সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহার করছে উপকারভোগীরা। ৩ হাজার লিটার ট্যাংকটিতে পানি ভর্তি থাকলে কয়েক মাস বৃষ্টি না হলেও তাদের সুপেয় পানি সমস্যা হবে না। ৩-৪ সদস্যের একটি পরিবার ৩ হাজার লিটার ট্যাংকটিতে বৃষ্টির পানি ধরে রেখে প্রায় সার বছরই পান করতে পারবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com