আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলি বাহিনী ছিটমহলের উত্তরে কিডনি ডায়ালিসিস রোগীদের জন্য একমাত্র কেন্দ্রটিও ধ্বংস করেছে। একে একে ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার সব সুবিধা ধ্বংস করে ফেলছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪ হাজার ৪১৮ জনে পৌঁছেছে।
আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় অবস্থিত নোরা আল-কাবি কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারে বোমা হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এই সেন্টারটি ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের অংশ এবং এটি ছিল উত্তর গাজার একমাত্র ডায়ালাইসিস সেন্টার, যা ১৬০ জনেরও বেশি কিডনি রোগীকে সেবা দিচ্ছিল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মুনির আল-বুরশ জানান, কয়েক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরেই ডায়ালাইসিস সেন্টারটি আংশিক চালু হয়েছিল। তার কিছুদিনের মধ্যেই আবারও হামলা চালিয়ে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হলো এটি।
তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে ইসরায়েলি বুলডোজার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে সক্রিয় রয়েছে। আর এই দৃশ্যই হামলার ভয়াবহতা তুলে ধরেছে।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব বলছে, চলমান যুদ্ধের মধ্যে কিডনি রোগে আক্রান্ত ৪১ শতাংশ রোগী মারা গেছেন, কারণ তাদের ডায়ালাইসিস সেন্টারে পৌঁছাতে দেওয়া হয়নি, কিংবা সেগুলোর অংশ বা পুরো প্রতিষ্ঠানই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ম্যাকেইন গাজার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “গাজায় কাজ করার সুযোগ না পেলে, এটা হয়ে উঠবে এক অভূতপূর্ব মানবিক বিপর্যয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমাদের এখনই একটি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, মানবিক সহায়তার সম্পূর্ণ প্রবেশাধিকার এবং প্রতিটি গেট খুলে দেওয়া প্রয়োজন, যাতে আমরা ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে পারি ও এই বিপর্যয় ঠেকাতে পারি।”
ম্যাকেইন আরও জানান, গাজার দক্ষিণের রাফাহ শহরের জিএইচএফ পয়েন্টে খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত ৩১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে একই তথ্য জানাচ্ছেন। এটা এক হৃদয়বিদারক ঘটনা।”