মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ০৩:৩২ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

হামজা-সামিতদের প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুরের ২০ গোল করা ইখসান ফান্দি

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫
  • ৩ বার পঠিত

ক্রীড়া ডেস্ক: ২০২৬ সালের এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে ঢাকায় সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য এই ম্যাচটি দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখন পর্যন্ত গ্রুপ ‘সি’-তে চার দলেরই সংগ্রহ সমান ১ পয়েন্ট করে।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর মাত্র দুইবার মুখোমুখি হয়েছে, দুইবারই জয় পেয়েছে সিঙ্গাপুর। মাঠের লড়াইয়ে এখনো বাংলাদেশ জয়হীন। তবে সাম্প্রতিক ফর্মে বাংলাদেশ তুলনামূলক ভালো করছে, শেষ পাঁচ ম্যাচে তারা জয় পেয়েছে দুটি, একটি ড্র এবং দুটি হার।

বিশ্লেষকদের মতে, ঢাকার ঘরের মাঠে খেলার কারণে মানসিকভাবে কিছুটা এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। তবে সিঙ্গাপুরের অভিজ্ঞতা এবং দ্রুতগতির খেলা বাংলাদেশের রক্ষণভাগের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল দলের স্কোরারদের ব্যর্থতা বেশ দৃশ্যমান হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে।

বাংলাদেশের শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা কোথায়?
বাংলাদেশ দলের অন্যতম শক্তি হচ্ছে মাঝমাঠের কিছু অভিজ্ঞ এবং ফর্মে থাকা খেলোয়াড়। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া তো আছেনই সাথে সামিত সোম ও হামজা চোধুরী মাঝ মাঠে ভালো কর্তৃত্ব বজায় রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আরেকটি বড় সুবিধা হলো ঘরের মাঠে খেলা। ঢাকার গরম আবহাওয়া এবং গ্যালারি ভর্তি সমর্থকদের উপস্থিতি প্রতিপক্ষের জন্য চাপ তৈরি করতে পারে।

বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার বাইরের দলগুলো এই পরিবেশে মানিয়ে নিতে হিমশিম খায়, যা বাংলাদেশের জন্য কৌশলগত সুবিধা এনে দিতে পারে। বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা বলা যায়, একজন ধারাবাহিক গোলদাতার অভাব। অনেক সময় ভালো বোঝাপড়া থাকলেও গোল করার সময় সামনে সঠিক সিদ্ধান্ত বা নিখুঁত ফিনিশিংয়ের ঘাটতি দেখা যায়। দলে একজন প্রকৃত ‘নাম্বার ৯’ স্ট্রাইকারের অভাব দীর্ঘদিন ধরেই স্পষ্ট, যা ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে প্রভাব ফেলছে।

রক্ষণভাগেও অনিয়মিত খেলা ও ভুল পজিশনের কারণে প্রতিপক্ষ সহজে সুযোগ তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে সেন্টার ব্যাকদের মাঝে সমন্বয়ের ঘাটতি এবং সেট-পিস ডিফেন্ড করার সময় বিভ্রান্তি লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশ ফুটবল দল এখন এক রকম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, পুরোনো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের সঙ্গে তরুণদের মিশেল ঘটছে।

সিঙ্গাপুর কোথায় এগিয়ে, কোথায় পিছিয়ে?
বাংলাদেশের ফিফা র‍্যাংকিং-এ অবস্থান ১৮৩তম, এদিক থেকে সিঙ্গাপুরের ফিফা র‍্যাংকিং ১৬১ হলেও, দলটি গেল ছয় ম্যাচে চারটিতেই হেরেছে। সাম্প্রতিক সময়ে মালদ্বীপের বিপক্ষে ৩-১ গোলের জয়ে কিছুটা নির্ভার থাকবে সিঙ্গাপুরের কোচ সুতোমু ওগুরা। এই দলের মূল শক্তির জায়গা আক্রমণভাগের তারকা ইখসান ফান্দি, ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৩৯ ম্যাচে ২০ গোলের মালিক এই ২৬ বছর বয়সী।

চোট কাটিয়ে ফিরেই মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচে ২ বার গোল দিয়েছেন। তবে মালদ্বীপের বিপক্ষে এই জয় নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার সুযোগ নেই সিঙ্গাপুরের, কারণ মালদ্বীপে গত ২ বছর যাবত ঘরোয়া ফুটবল বন্ধ।

ইখসান ফান্দি ছাড়াও সিঙ্গাপুরের দুইজন ম্যাচ উইনার আছেন, ১৪০ ম্যাচ খেলা অধিনায়ক হারিস হারুন ও ১২২ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে সাফুয়ান বাহারুদিন। সিঙ্গাপুরের খেলোয়াড়দের উচ্চতা বাংলাদেশের রক্ষণভাগের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে।

বাংলাদেশে বাড়তি উচ্ছ্বাস
কানাডা থেকে আসা সামিত সোম ও ইংল্যান্ড থেকে বাংলাদেশের ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা বনে যাওয়া হামজা চৌধুরীকে ঘিরে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা পরিকল্পনা করছেন। সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের এই ম্যাচকে ঘিরে বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের মধ্যে রয়েছে নতুন করে আশার সঞ্চার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতীয় দলের পারফরম্যান্স খুব একটা চোখে পড়ার মতো না হলেও, কিছু বিষয় এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশের সমর্থকদের আশাবাদী করে তুলেছে।

বিশেষ করে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার নিয়ে আসা, তার মধ্যে ভুটানের বিপক্ষে এই জয়। আট বছর আগে ভুটানের বিপক্ষে হেরেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফুটবল অঙ্গন থেকে একরকম হারিয়ে গিয়েছিল। সেই ভুটানের বিপক্ষে জয়ের পরেই বাংলাদেশ ফুটবলে কিছুটা জৌলুস ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ বনাম সিঙ্গাপুর ম্যাচকে কেন্দ্র করে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে টিকিট নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছিল। অনলাইনে টিকিট বিক্রির দায়িত্ব পাওয়া প্ল্যাটফর্ম প্রথম দিনেই দর্শকদের চাপ সামলাতে হিমশিম খায়। সাইটে হঠাৎ প্রচণ্ড ভিজিটরের চাপ এবং একটি সাইবার হামলার কারণে প্রাথমিকভাবে টিকিট বিক্রি বন্ধ রাখতে হয়। পরে নতুন সময় অনুযায়ী হাজার হাজার সমর্থক একযোগে প্রবেশ করে টিকিট সংগ্রহের চেষ্টা করেন।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে, এই ম্যাচের জন্য মোট ১৮ হাজার ৩০০টি টিকিট ছাড়া হয়েছে, যার মধ্যে সাধারণ গ্যালারি থেকে শুরু করে ভিআইপি বক্স পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণির টিকিট রয়েছে। প্রথম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই গ্যালারির বেশিরভাগ টিকিট বিক্রি হয়ে যায়, আর ক্লাব হাউজ ও স্কাই ভিউ ক্যাটাগরিগুলো দ্রুত ‘সোল্ড আউট’ হয়ে যায়। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে ফুটবলপ্রেমীরা টিকিট কেনার জন্য অনলাইনে মরিয়া হয়ে উঠেছেন, এমনকি দেশের বাইরেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা ম্যাচটি সরাসরি মাঠে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

অনেকে সামাজিক মাধ্যমে টিকিট রিসেল সম্পর্কেও খোঁজখবর নিচ্ছেন, যদিও ফেডারেশন এ ধরনের অনানুষ্ঠানিক লেনদেন থেকে বিরত থাকতে বলেছে। এখনও ফেসবুক মাধ্যমে কারো কাছে টিকিট থাকলে ম্যাচ দেখার ব্যবস্থা করে দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে কিছু পোষ্ট চোখে পড়ছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com