হাফসা :দ্বীন প্রতিষ্ঠায় রুকনদেরকে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে- বলে জানিয়েছেন মাওলানা আব্দুল হালিম।
আজ ১৫ই আগষ্ট শুক্রবার উত্তরা পশ্চিম থানায় ষান্মাসিক রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় আওয়ামী-বাকশালীরা কথিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে জামায়াত নির্মূল ও জাতিকে নেতৃত্ব শূণ্য করার জন্য আল্লামা সাঈদীকে সর্ব প্রথম ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিলো বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।
তিনি আজ রাজধানীর উত্তরার স্থানীয় একটি অডিটরিয়ামে উত্তরা পশ্চিম থানা জামায়াত আয়োজিত এক ষান্মাসিক রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মাজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ফিরোজ আলমের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহাগনরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন জোনের সহকারী পরিচালক মাহবুব আলম মুকুল, ঢাকা-১৮ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক, ৫১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী আরব আলী, থানা অফিস সম্পাদক জিএম আসলাম, থানা বাইতুলমাল সম্পাদক মশিউর রহমান, থানা কর্মপরিষদ সদস্য শহিদুল ইসলাম, মাহমুদুর রহমান, জাহাঙ্গীর শিকদার, ওয়ার্ড সভাপতি হাফেজ ইব্রাহিম খলিল প্রমূখ। আলোচনা শেষে শহীদ আল্লামা সাঈদী, শহীদ জাতীয় নেতৃত্ববৃন্দ ও জুলাই শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।
মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ছিলেন বিশ্ববরেণ্য মুফাসসিরে কুরআন এবং প্রখ্যাত বাগ্মী। একজন বিশ^খ্যাত আলেম হিসাবে
মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রেই
তার ব্যাপক পরিচিতি ছিলো। তিনি বারবার জাতীয় সংসদের সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার খ্যাতি ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগ সরকার তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হত্যা করার ষড়যন্ত্রের নীলনকশা প্রয়ণন করেছিলো। কিন্তু আল্লাহ তা’য়ালার ফয়সালা ছিলো ভিন্ন। ২০১২ সালে স্কাইপ কেলেংকারীর মাধ্যমে সে ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয় এবং স্বাক্ষী সুখরঞ্জন বালীর অপহরণের স্বৈরাচারের নীলনকশা জাতির সামনে সুস্পট হয়ে ওঠে। তারপরও তাকে দীর্ঘ ১৫ বছর কারাভোগ করতে হয়। তার কারাগারে মৃত্যুর বিষয়টি এখনো রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে। তিনি আল্লামা সাঈদীর মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের আহবান জানান।
তিনি বলেন, রুকনিয়াত কোন পদ-পদবী নয় বরং একটি মানের নাম। আমরা আল্লাহর দ্বীনের জন্য জানমাল কোরবানী করার প্রত্যয় নিয়েই শপথবদ্ধ হয়েছি। আর শপথের মূল কথায় হলো, ‘আমার নামাজ, আমার কোরবানী, জীবন ও মৃত্যু সব কিছু আল্লাহর জন্য’। তাই আল্লাহর জমীন আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদেরকে ময়দানে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবে হবে। তিনি ফ্যাসিবাদে সরকারের আমলে জামায়াতের ওপর জুলুম- নির্যাতনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ১৮ বছরে ১১ শীর্ষনেতাকে শহীদ করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীরও রয়েছেন। এ সময় আমাদের মোট শহীদের সংখ্যা ৫’শর অধিক। মারাত্মক আহত হয়েছেন ৫ হাজার। এদের মধ্যে অনেকেই পঙ্গুত্ববরণ ও দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। ২ হাজার নারী সহ লক্ষাধিক মানুষ কারাবরণ করেন। কিন্তু কোন ভাবেই জামায়াতের অগ্রযাত্রা রোধ করা যায়নি। তিনি ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করতে রুকনদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণে আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর আমরা এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। জুলাই ঘোষণায় জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার পুরোপুরি প্রতিফলন ঘটেনি। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা কেটে যায় নি। রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও গণহত্যার এখনো পুরোপুরি দৃশ্যমান নয়। তিনি এসব বিষয়ে অনিশ্চয়তা দূর করে অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান।