শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৪২ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সিভিল সার্ভিসে বৈষম্য দূর করতে হবে : আলাল তারেক রহমানের নির্দেশে খাল-ডোবার নর্দমা পরিষ্কার অব্যাহত রেখেছি: এস এম জাহাঙ্গীর মানবাধিকার রক্ষায় মাইলফলক স্থাপন করে যেতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা শিবলীর পরিবারের পাশে ছাত্রশিবির ভারত ম্যাচের আগে অধিনায়ককে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পাকিস্তান বছরখানেক পর রাজা চার্লসের সঙ্গে হ্যারির সাক্ষাৎ প্রতিদিন ষড়যন্ত্র ও সংকট ঘনিভূত করা হচ্ছে : প্রিন্স শান্তিপূর্ণ ডাকসু নির্বাচনের জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ আগামী নির্বাচনে প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন: সিইসি

জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সিভিল সার্ভিসে বৈষম্য দূর করতে হবে : আলাল

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১ বার পঠিত

সিটিজেন প্রতিবেদক: জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সিভিল সার্ভিসে বৈষম্য দূর করতে হবে বলে মনে করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। শনিবার সিভিল সার্ভিসের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সভায় তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে কর্মরত ও প্রাক্তন সদস্যদের পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সংবিধান সংস্কার কমিটির সাবেক সদস্য ফিরোজ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম রব্বা‌নি, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইলিয়াছ মাতাব্বর।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ২৫ ক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ-এর আহ্বায়ক কৃষিবিদ ইকবাল আহম্মেদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান ও আতিয়া সুলতানা।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশে প্রশাসনিক সংস্কারের প্রথম পথিকৃৎ। বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রশাসনিক সংস্কারকে প্রাধান্য দেবে। কারণ, জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সিভিল সার্ভিসে বৈষম্য দূর করতেই হবে। ভোটদানই পারে সত্যিকারের পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করতে।

এসময় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, সব পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে ক্যাডারদের বৈষম্য নিরসন সম্ভব। দেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ফিরোজ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে দুর্নীতি ও অস্বচ্ছ শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন না হলে আরেকটা গণ-অভ্যুত্থান হতে পারে।

এ সময় বক্তারা বলেন, ১৪টি মূল ক্যাডার ও ১৪টি সাব ক্যাডারসহ মোট ২৮টি ক্যাডার সমন্বিত করে একটি পেশাদার, আদর্শমুখী ও একীভূত সিভিল সার্ভিস গঠন করা হয়েছিল। গতানুগতিকতাকে বাদ দিয়ে সুস্থ ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য পদ্ধতির মাধ্যমে গুণগত মানের বিচারে সিভিল সার্ভিসের সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার পদক্ষেপ হিসেবে এই পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছিল। সর্বস্তরের মেধাবী কর্মকর্তারা যাতে সরকার পরিচালনায় ভূমিকা রেখে দেশের উন্নয়নকে গতিশীল করতে পারে– এটা ছিল উদ্দেশ্য।

তারা উল্লেখ করেন, ১ সেপ্টেম্বর ১৯৮০, সিভিল সার্ভিস গঠনের দিন তৎকালীন সংস্থাপন মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব:) মাজেদুল হক বলেছিলেন, ৮০-এর ১ সেপ্টেম্বর জাতির ইতিহাসে স্মরণীয় দিন। উপমহাদেশে তো নয়ই, কমনওয়েলথভুক্ত দেশের মধ্যে আমরাই প্রথম প্রত্যেকের দক্ষতার উপর যথাযোগ্য মর্যাদা লাভের সমানাধিকার নিশ্চিত করেছি। অথচ, বিগত ৪৫ বছরেও কোনও সরকার সব সার্ভিসের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করেনি। মেধাভিত্তিক সিভিল সার্ভিস গঠনের কোনও পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শিক দল ১৯৯১-১৯৯৬ শাসনামলে জিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিলেও একটি ক্যাডারের চাতুরতায় সফল হতে পারেনি বরং একটি ক্যাডার তাদের গোষ্ঠী-স্বার্থে সিভিল সার্ভিসে স্বৈরাচারীত্ব কায়েম করেছে।

বক্তারা এ সময় রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থে মেধাভিত্তিক সিভিল সার্ভিস গঠনে ডিএস পুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা বাতিলের দাবি জানান, পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয়ের ওপর গুরুত্ব দেন এবং সবার সমান সুবিধা নিশ্চিত করে জবাবদিহিমূলক ও উন্নত পেশাদার সেবা ব্যবস্থাপনা গড়তে সরকারের প্রতি আহ্বান করেন।

তারা আরও বলেন, স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কাজে স্ব স্ব ক্যাডারের মেধাবীদের পেশাদার জ্ঞান কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে উপসচিব পুল করা হলেও বর্তমানে এক ক্যাডারের উপসচিবকে আরেক মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করে পুলের মূল চরিত্র ও উদ্দেশ্যকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে একটি ক্যাডারের স্বেচ্ছাচারিতায়। একটি ক্যাডার পদ ছাড়াই পদোন্নতি পায়, অন্য ক্যাডারের পদ খালি থাকলেও এবং একই পদের ফিডারের দ্বিগুণ কাল অতিবাহিত হলেও পদোন্নতি পায় না। এটি চূড়ান্ত বৈষম্যমূলক ও স্বেচ্ছাচারিতা।

উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ক্যাডারগুলোর পরিচিতি, কার্যক্রম, সাফল্য তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি, বিভিন্ন ক্যাডারের উন্নয়নে এবং জনগণের উন্নত সেবা প্রাপ্তিতে ভবিষ্যতে করণীয় বিষয়ে বক্তারা আলোচনা করেন।

এসময় বক্তারা বলেন, সিভিল সার্ভিসের কার্যকর সেবা নিশ্চিত করতে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ হতে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি করা হয়েছে অর্থাৎ প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে স্ব-স্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তারা পদায়িত হবেন। বর্তমানে প্রতিটি সেক্টরে নীতি নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা যারা সেই সেক্টর সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ। ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্ক্ষিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না।

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ও উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মো. জামিলুর রহমানের অনুষ্ঠানে পরিষদের সমন্বয়ক ও উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. আহসান হাবীব স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল, যা অদ্যাবধি এভাবে উদযাপিত হয়েছে বলে জানা যায়নি। দিবসটি পালন করায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদকে বক্তারা ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ক্যাডারগুলোর মধ্যে সীমাহীন বৈষম্য দূর করতে এবং জনবান্ধব সিভিল সার্ভিস গড়ার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গোলটেবিল বৈঠক, সেমিনার ও আলোচনা সভার মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছ থেকে সমস্যা ও তার সমাধান খুঁজে বের করে ঐকমত্য কমিশনে লিখিতভাবে জমা দেয়া হয়েছে। কমিশনের সাথে আলোচনা সভায় বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে। কমিশনও সে বিষয়ে একমত পোষণ করেছে, বৈষম্য দূর করতে কাজ করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com