সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৮ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
সিলেটে জাতীয় পার্টির বিশুদ্ধ খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ শিক্ষাবিদ হাসানুজ্জামানের ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষা’ বই প্রকাশিত হলো কুমিল্লা সিটি করপোরেশনর কাজ পরিদর্শন করেন মেয়র ডা: তাহসিন বাহার সূচনা ভারতের মসলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্বেগ গরমে অসুস্থ হয়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অযত্নে পড়ে আছে ৬৫০ কোটি টাকার ডেমু ট্রেন, অনিয়ম-দুর্নীতিতে স্বপ্নভঙ্গ দক্ষিণখানে রিকশাচালকদের মাঝে পানি বিতরণ করলেন খন্দকার সাজ্জাদ খালের কচুরিপানা উচ্ছেদে নেমেছেন ডা. প্রান গোপাল দও এমপি। এমপি’র নাম ভাঙ্গীয়ে জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে হুমকি

এমন করছেন মুশফিক?

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
  • ২১৯ বার পঠিত

চতুর্থ দিনে শুরুতে বোলিং শুরু করেছিলেন সাকিব আল হাসান। তাঁর পঞ্চম বলে ফিরে আসল দৃশ্যটা। পয়েন্ট অঞ্চলে খেলেই রানের জন্য পড়িমরি করে ছুটেছিলেন আফসার জাজাই। অন্য প্রান্ত থেকে সাড়া দেন ইয়ামিন আহমদজাই। কিন্তু পয়েন্ট থেকে ফিল্ডারের দ্রুতগতির থ্রো তৈরি করে রানআউটের সুবর্ণ সুযোগ। অথচ এক যুগ সময়ের বেশি অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম কিনা সুযোগটা দুহাতে ফেলে দিলেন!

সেই পুরোনো অভ্যাস। থ্রো আসার আগেই স্টাম্পের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মুশফিক। তাতে নষ্ট হয়েছে বল সরাসরি স্টাম্পে লাগার সম্ভাবনা। আর বল ধরে স্টাম্প ভাঙতেও দেরি করেছেন মুশফিক। শরীর ঘুরিয়ে স্টাম্প ভাঙতে তো এমনিতেও কয়েক সেকেন্ড দেরি হয়। ক্রিকেটে রানআউট থেকে বাঁচতে এটুকু সময় যথেষ্ট। আর মুশফিক তো মহেন্দ্র সিং ধোনি নন যে স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি খাটিয়ে ভেবে নেবেন, যেহেতু সামনে দাঁড়িয়েছেন, তাই বল গ্লাভসবন্দী করার চেয়ে হাতের টোকায় স্টাম্পের দিকে পাঠালে সময় কম লাগবে। এ সুযোগে নিশ্চিত রানআউট থেকে বেঁচে যান ইয়ামিন আহমদজাই। আর একটি উইকেট ফেলার বদলে আফগানিস্তানের স্কোরবোর্ডে উল্টো ১ রান যোগ করেন মুশফিক!

ভুল হতেই পারে। তবে মুশফিকের মতো অভিজ্ঞ কেউ একই ভুল বারবার করলে প্রশ্নটা জাগতেই পারে, উইকেটকিপিংয়ের মৌলিক বিষয়াদি তাঁর মনে আছে তো? গত বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কেন উইলিয়ামসনের ক্ষেত্রেও প্রায় একই ভুল করেছিলেন মুশফিক। তামিম ইকবালের থ্রো সরাসরি স্টাম্পে লাগার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু মুশফিক বলটা ধরেছিলেন স্টাম্পের সামনে দুহাত বাড়িয়ে। পেছন থেকে ধরলেও উইলিয়ামসনকে আরামসে রান আউট করতে পারতেন। কিন্তু স্টাম্পের সামনে থেকে বল ধরার চেষ্টায় তাঁর শরীরে লেগে স্টাম্প আগেই ভেঙে যায়, আর সে যাত্রা বেঁচে যান কিউই অধিনায়ক।

ওই সময় ওই আউট ম্যাচের ফল বদলে দিত। কে জানে বাংলাদেশের বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সটাও অনেক রঙিন দেখাতে পারত। কারণ, টেবিলের হিসেব বলছিল, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচটা জিতলে সেমিফাইনালে ওঠার পথে অনেকটাই এগিয়ে থাকত বাংলাদেশ। মুশফিকের শিশুসুলভ ভুলে তা না হওয়ার জ্বলুনি বেড়েছে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ পয়েন্ট টেবিলে অষ্টম হয়ে বিদায় নেওয়ার পর। কেন বারবার এমন করছেন মুশফিক?

ব্যাখ্যা দিলেন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে শ্রদ্ধাভাজন সাবেক জাতীয় কোচ ও ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব জালাল আহমেদ চৌধুরী। তাঁর ভাষায়, উইকেটকিপিংয়ে ‘কমন সেন্স’ খুব গুরুত্বপূর্ণ। থ্রোয়ের সময় স্টাম্পের সামনে না পেছনে দাঁড়াবেন, সেটি স্বাভাবিক বিচার-বুদ্ধির অংশ। কারণ, কিপিংয়ের এ ‘স্টান্স’-এর বাঁধাধরা কোনো ব্যাকরণ নেই। ওভাবে স্টাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে বল গ্লাভসবন্দী করে মুশফিক ঠিক কাজ করেননি বলেই মনে করেন জালাল আহমেদ।

হ্যাঁ, স্টাম্পের সামনে দাঁড়িয়েও বল ধরা যায়। সে ক্ষেত্রে বল ধরার পর উইকেটরক্ষককে স্টাম্প ভাঙতে হবে বিদ্যুৎগতিতে। কারণ, সামনে থাকলে স্টাম্প থেকে উইকেটরক্ষকের দুহাতের দূরত্ব তুলনামূলক বেশি থাকে, যা স্টাম্পের পেছনে দাঁড়ালে হয় না। জালাল আহমেদের ব্যাখ্যা, ‘(স্টাম্পের) পেছনে দাঁড়াতে পারত। মাঝে অস্ট্রেলিয়ানরা সামনে দাঁড়াত। স্টাম্পের সামনে থাকলে স্পিড (স্টাম্প ভাঙার) থাকতে হবে। উইকেটরক্ষকের জন্য পেছনে থাকাই ভালো।’

জালাল আহমেদ এ কথাও মনে করিয়ে দিলেন, স্টাম্পের সামনে কিংবা পেছনে দাঁড়ানোর নির্দিষ্ট কোনো ব্যাকরণ নেই। পুরো ব্যাপারটাই কমন সেন্স—কোথায় দাঁড়ালে লাভ, কোথায় লোকসান। ‘এর কোনো ব্যাকরণ নেই। পুরো ব্যাপারটা আসলে কমন সেন্স। তবে ওভাবে (স্টাম্পের সামনে) দাঁড়ানো ঠিক হয়নি।’ কেন ঠিক হয়নি, সে ব্যাপারে স্টাম্প ভাঙতে দেরি হওয়ার কথা বলার পাশাপাশি আরও এক সমস্যার কথা বললেন সাবেক এ জাতীয় কোচ, ‘অনেক সময় স্টাম্পে সরাসরি বল লাগার সম্ভাবনা থাকে। সামনে দাঁড়ালে সে সুযোগ থাকে না।’

বিশ্বকাপে ওভালের সে ম্যাচটা নিশ্চয়ই এখনো মনে আছে? তামিমের থ্রো সরাসরি স্টাম্প ভেঙে দেওয়ার পথে ‘বাধা’ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। স্টাম্পের পেছনে না থেকে তিনি দুহাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সামনে। থ্রোটা টেনে এনে উইকেট ভাঙবেন বলে। উদ্দেশ্য ছিল খুবই মহৎ। কিন্তু কখনো কখনো আগ বাড়িয়ে কিছু না করে সঠিক সময়ের অপেক্ষা করা ভালো। মুশফিক ভুল করেছিলেন ওখানেই। হাত বাড়াতে গিয়ে বল গ্লাভসে আসার আগেই কনুইয়ের গুঁতোয় ফেলে দিলেন বেল!

ব্যাটিংয়ে প্রভাব রাখে বলে উইকেটকিপিংয়ের গ্লাভস খুলতে রাজি নন মুশফিক। তাঁর মতো ব্যাটসম্যানের ব্যাটিংটাও বাংলাদেশের বড় দরকার। কিন্তু এভাবে বারবার যেভাবে ভুল করছেন, তাঁর ওপর রাখা আস্থাটুকু ফেলে দিচ্ছেন, তাতে প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক। প্রশ্নটা হলো, একজনের ব্যাটিং ভালো হবে—এ শর্তে পুরো দলের ক্ষতি মেনে নেওয়া আর কত দিন?

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com