নিজস্ব প্রতিবেদক: শারদীয় দুর্গোৎসবে কোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলছেন, তারপরেও পূজায় কোথাও হামলা হলে সেটি মোকাবেলার জন্য পুলিশের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য মণ্ডপগুলোয় পুলিশের কন্ট্রোল রুমসহ আলাদা ফোর্স মোতায়েন থাকবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পূজায় কোনো সহিংস ঘটনার গোয়েন্দা তথ্য আমাদের কাছে নেই। আপনারা জানেন, ঢাকা মহানগরীর মধ্যে পরপর পাঁচটি বোমা হামলা হয়েছিল, যা ছিল পুলিশের ওপর জঙ্গিদের হামলা। হামলায় সংশ্লিষ্ট টোটাল টিমটা আমরা ধরতে পেরেছি এবং বাকিদের সবাই আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। ওইদিক থেকে একটা জঙ্গি হামলার যে আশঙ্কা ছিল, কিন্তু এখন আমরা মনে করি, সেটি এখন আর নেই।
রাজধানীতে ২৩৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে চারটিকে বিশেষ মণ্ডপ হিসেবে ধরেছি। এগুলো হলো- ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির, ধানমন্ডি পূজা মণ্ডপ ও বনানী সর্বজনীন পূজা মণ্ডপ। এ চারটা বিশেষ শ্রেণির মণ্ডপে আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। নিরাপত্তার জন্য আর্চওয়ে থেকে শুরু করে সিসিটিভি ক্যামেরাসহ সবকিছু থাকবে।
‘এ ছাড়া ঢাকার ৫টি বৃহত্তর মন্দির- সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, উত্তরা সর্বজনীন পূজা মণ্ডপ, বসুন্ধরা সর্বজনীন পূজা মণ্ডপ এবং কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের পূজা মণ্ডপগুলোয়ও সিসিটিভিসহ আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।’
কমিশনার বলেন, ‘ঢাকায় ২ তারকা চিহ্নিত ৮৬টি পূজা মণ্ডপ, এক তারকাবিশিষ্ট ৭৭টি এবং সাধারণ শ্রেণির ৬১টি পূজা মণ্ডপ রয়েছে। এসব পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তার জন্য আমাদের যেমন সাধারণ ফোর্স নিয়োজিত থাকবে তেমনি আয়োজকদের পক্ষ থেকে পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন থাকবে। যেসব পুণ্যার্থী আসবেন তাদের তল্লাশি করা হবে। যেসব জিনিস নিয়ে মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তারা যেন সেগুলো নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে, এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ব্যবস্থা নেবেন।’
‘পূজায় ইভটিজিং, মাদক নিয়ে নাচানাচি প্রতিরোধ এবং সারা শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা থাকবে। যেসব পূজা মণ্ডবে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিসহ ভিভিআইপিরা আসবেন, সেসব মণ্ডপে এখন থেকেই আমাদের সার্ভিলেন্স রয়েছে। প্রতিটি স্থাপনা সুইপিং করা হবে। এ ছাড়া, রুফটপ থেকে শুরু করে পুরো রাস্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।’
বিসর্জনের দিন নির্দিষ্ট রুট ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিসর্জনস্থলে পৌঁছানো এবং সুশৃঙ্খলভাবে বিসর্জন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঝুঁকিপূর্ণ কোনো মণ্ডপ রয়েছে কি না, জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপের এমন কোনো তথ্য নেই। ২৩৩টির বাইরেও পারিবারিক যেসব পূজা মণ্ডপ রয়েছে, তারা চাইলে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেব।