নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ১০ ও সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে বেতন প্রস্তাব পাঠানোর চিন্তাভাবনা করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। দ্রুত আলোচনা করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জাকির হোসেন মঙ্গলবার সিটিজেন নিউজকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১০ ও সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে এবং নতুন সৃষ্ট পদ সহকারী প্রধান শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন প্রদানের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে। শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী বেতনবৈষম্য দূর করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষকদের ১০ ও সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে নেয়ার প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে দেয়া হলেও তা ফিরিয়ে দেয়া হয়। প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ার পর শিক্ষকরা আন্দোলনে যুক্ত হন। এ বিষয়ে আমি শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন করে প্রস্তাব পাঠানো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ১০ গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ার পর নতুন করে প্রস্তাব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখানে প্রধান শিক্ষকদের ১১ ও সহকারী শিক্ষকদের ১৩ গ্রেডে নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডের প্রস্তাব তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু এ সময়ে সারাদেশের শিক্ষকরা এক হয়ে গ্রেড ও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।
তাদের আন্দোলন থেকে ফিরিয়ে আনতে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। তার ভিত্তিতে বর্তমানে প্রধান শিক্ষকদের ১০, সহকারী প্রধান শিক্ষকদের ১১ ও সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডের জন্য প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের ৮ম, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের ৯ম গ্রেডে বেতনের প্রস্তাবও পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মহাজোটের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ছামসুদ্দিন মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তিনি আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন। সেটি বাস্তবায়ন করলে আমরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেব। দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখে আন্দোলনের পরবর্তী ঘোষণা দেয়া হবে। প্রধান শিক্ষকদের ১০ ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড না দেয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরবো না। মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয় চাইলে আলোচনার রাস্তা খোলা আছে। ডাক পেলেই শিক্ষকরা আলোচনায় বসবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে সরকার আগামী ১৩ নভেম্বরের মধ্যে বেতনবৈষম্য নিরসনের দাবি না মানলে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জনসহ লাগাতার কর্মবিরতিতে যাবেন বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের নেতারা। গত ২৩ অক্টোবর শহীদ মিনারে শিক্ষকদের মহাসমাবেশ পুলিশের বাধায় পণ্ড হলে তারা এ ঘোষণা দেন।