নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের ২০টি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে ৮ বার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৭০ বছরে ২০টি জাতীয় সম্মেলন হয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। আর চারবার করে সভাপতি হয়েছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম। নতুন এ রাজনৈতিক দলের প্রথম সম্মেলনটি হয় ঢাকার ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন।
সভাপতির দায়িত্ব পান মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক। প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরবর্তীতে তিনি হন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। ১৯৫৩, ৫৫ এবং ৫৭ সালে দলের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৫৭ সালেই মাওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিয়ে নতুন দল গঠন করেন। এ সময় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি হলে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর ১৯৬৪ সালে পঞ্চম সম্মেলনে সভাপতি হন মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ আর সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৬ সালে ষষ্ঠ সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হন তাজউদ্দিন আহমদ।
১৯৬৭ এবং ৭০ সালে দলের ৭ম এবং অষ্টম সম্মেলনেও শীর্ষ দুই পদ অপরিবর্তিত থাকে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর ১৯৭২ সালে অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের ৯ম সম্মেলন। সভাপতি হন বঙ্গবন্ধু আর সাধারণ সম্পাদক পদে আসেন জিল্লুর রহমান।
১৯৭৪ সালে দশম সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু দলের দায়িত্ব ছেড়ে দিলে সভাপতি হন এএইচএম কামারুজ্জামান। আর সাধারণ সম্পাদক পদে অপরিবর্তিত থাকেন জিল্লুর রহমান। ঘাতকদের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হবার পর ১৯৭৭ সালে অনুষ্ঠিত হয় ১১তম সম্মেলন। আহ্বায়ক হন সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন। ১৯৭৮ সালে ১২তম সম্মেলনে সভাপতি হন আবদুল মালেক উকিল আর সাধারণ সম্পাদক হন আবদুর রাজ্জাক। ১৯৮১ সালের ১৩-১৫ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দলের ১৩তম সম্মেলন।
শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ১৭ই মে দেশে ফিরে তিনি দলের দায়িত্ব নেন। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবদুর রাজ্জাক। তবে, আব্দুর রাজ্জাককে বাকশাল পুনরুজ্জীত করার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। এরপর হওয়া সবগুলো সম্মেলনেই সভাপতি পদে অপরিবর্তিত থাকেন শেখ হাসিনা।
আর ১৯৮৭ সালে ১৪তম সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। ১৯৯২ এবং ৯৭ সালে পনের ও ষোলতম সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে অপরিবর্তিত থাকেন জিল্লুর রহমান। ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের সতেরতম সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান আব্দুল জলিল।
২০০৯ সালে ১৮তম সম্মেলনে এ দায়িত্ব পান সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ২০১২ সালের ১৯তম সম্মেলনেও একই দায়িত্ব পান সৈয়দ আশরাফ। এরপর, ২০১৬ সালে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয় ওবায়দুল কাদেরকে। আসছে ২০-২১ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে আওয়ামী লীগের ২১ তম সম্মেলন।