অনলাইন ডেস্ক: চোখের বর্ণ ও মানব প্রকৃতির মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্বে জলবায়ুর প্রভাব ও অভিযোজন অনুসারে নানা জায়গার মানুষের চোখের বর্ণ নানাভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। তবে নীল চোখের মানুষদেরকে সচরাচর দেখা যায় না। নীল চোখের সাথে ককেশীয় বংশগোত্রের একটি অদ্ভুত মিলবন্ধন রয়েছে।
পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের চোখের রঙের ভিত্তিতে পরিচালিত এক জরিপ থেকে পাওয়া তথ্যমতে দুই ধরনের মানুষের চোখের রঙ নীল হতে পারে। তারা হলেন- সুদূর অতীত কোনো পূর্বপুরুষ থেকে জেনেটিক পরিবর্তনের ফসল হিসেবে বা দৃষ্টিজনিত কোনো চোখের রোগের (যেমন-অকুলার অ্যালবিনিজম) ফলে পিগমেন্ট পরিবর্তনের কারণে।
জেনেটিক পরিবর্তন
মানুয়ের চোখের মধ্যে ‘মেলানিন’ নামের এক ধরনের বাদামী পিগমেন্ট থাকে। এ মেলানিন পিগমেন্টের OCA2 জিনের পরিবর্তনের কারণেই মূলত চোখের রঙে নীল পরিবর্তন আসে।
কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষ এবং আণবিক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক হান্স আইবারগ এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘মানবজাতির সবাই এক সময় পিঙ্গল বর্ণের চোখ ছিল। তবে পরবর্তীতে অনেকের ক্রমোজোমে OCA2 জিনের বিবর্তনে চোখের রঙে পরিবর্তন এসেছে এবং ফলশ্রুতিতে তারা পিঙ্গল বর্ণের চোখ নিয়ে জন্মগ্রহণ করার সক্ষমতা হারায়।’
চোখের সমস্যা
স্বাভাবিক জিনগত পরিবর্তন ছাড়াও চোখের কিছু সমস্যার কারণে শিশুদের ক্ষেত্রে নীল চোখের বিষয়টি দৃশ্যমান হতে পারে। এ ক্ষেত্রে গবেষণায় প্রধান যে দুটি সমস্যা ওঠে এসেছে, তা হলো- ওয়্যারডেনবারগ সিন্ড্রোম এবং অকুলার অ্যালবিনিজম।
চোখের ক্ষেত্রে এ দুটি সমস্যার কারণেও রঙের পরিবর্তন আসে। এ ধরনের সমস্যায় পিগমেন্ট উৎপাদন কোষের বৃদ্ধি এবং উন্নয়ন প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে OCA2 জিনের কারণে অনেক কম পিগমেন্ট সৃষ্টি হয় এবং পিঙ্গল রঙের চোখের পরিবর্তে উজ্জ্বল নীল রঙের চোখ দেখায়।
নীল রঙের চোখ ছাড়াও কালো, বাদামী, সবুজ, ধূসর বা গ্রে রঙের চোখের দেখা মিলে। নীল চোখের নারীদের ক্ষেত্রে বলা হয়, তারা আলোকদৃষ্টি সম্পন্ন হয়ে থাকেন।তারা সাধারণত নীল আকাশের মতোই উদার মনের হন এবং ভীষণভাবে চারপাশের প্রকৃতির প্রতি নজর রেখে চলেন।