বিশেষ প্রতিবেদক: ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার একটা অনুরোধ, নিজ নিজ অবস্থান থেকে আপনারা আমাদের এই দেশ, এই মাতৃভূমির উন্নয়নে জন্য কাজ করবেন। আমরা এই দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলব, যে সোনার বাংলার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করছি। যা বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়ক হবে।
আজ রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আইডিইবির ২৩তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ‘স্কিল রেডিনেস ফর অ্যাচিভিং এসডিজিস অ্যান্ড অ্যাডাপ্টিং আইআর ৪.০’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একসময় বাংলাদেশের কথা বললে ভিক্ষার ঝুলির কথা বলা হতো। সেই বাংলাদেশ এখন আর নেই। গত ১০ বছরে বাংলাদেশের পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছি। বদলে গেছে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থান। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সামনে উন্নয়নের রোল মডেল। এ বাংলাদেশ আগের বাংলাদেশ নয়। আমাদের একটি লক্ষ্য আছে, সেটি পূরণ করতে চাই। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। সেই পর্যন্ত আমাদের এখনকার পরিস্থিতি ধরে রাখতে হবে।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের ক্ষেত্র বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নির্মাণ করা হচ্ছে। ৩২৯ উপজেলায় ২০ হাজার ৫২৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে দক্ষ নাগরিক গঠনের কাজ ত্বরান্বিত হবে।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের দাবিসমূহ যথাযথভাবে জানানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভুলটা তো আপনারাই করেছেন। বাজেটের আগে যদি ইনক্রিমেন্টসহ দাবি সামনে আনা যায় তাহলে কিছু একটা সমাধানের ব্যবস্থা হয়। কিন্তু তা না করার কারণে দাবি মানা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, গতবার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ জন্য খারাপ লাগছে। যা হোক আগামীতে আপনাদের সকল সমস্যা দেখব।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ পালনের নানা কর্মসূচির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন উদযাপন করবেন তখন সবচেয়ে বড় কর্মসূচি হবে পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেয়া। ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণ করুন। জলাধার রক্ষা করবেন। আপনারা সারাদেশে কাজ করছেন। পরিবেশের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দেবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ছি যাতে করে কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আমাদের দেশে বিশাল জনগোষ্ঠী বাস করে। খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি বসবাসের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা চাই একটি মানুষও যেন গৃহহীন না থাকে। বাংলাদেশে প্রতিটি গৃহহীন মানুষ বসবাসের উপযোগী একটি ঘর পাবে মুজিববর্ষে সেটি আমাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। মানুষের মৌলিক চাহিদা একে একে পূরণ করছি। আপনাদের কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ রক্ষা উন্নয়ন যেন ভালোভাবে হয় সেটি লক্ষ্য করবেন। অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়রদের কাজের ক্ষেত্র বাড়বে।
সবশেষে তিনি বলেন, গণভবন জনগণের ভবন। আপনাদের জন্য সবসময় এর দ্বার উন্মুক্ত। আগে জানালে এ সম্মেলন গণভবনে আয়োজন করা যেত। আগামী সম্মেলনে গণভবনে আপনাদের দাওয়াত থাকল।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আইডিইবির সভাপতি একে এম এ হামিদ। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান। তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনে দেশি-বিদেশি অনেক প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।