চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে পুনরায় মনোনয়ন না পাওয়া প্রসঙ্গে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন নিজেকে ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’ বলে মন্তব্য করেছেন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘মেয়রের পদ বড় না, রাজনীতিটাই বড়। কেউ যদি বলত তিনি মেয়র হতে চান, আমি ছেড়ে দিতাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে দলই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শতভাগ মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করার কোনো মানে হয় না। মনে রাখতে হবে, আমরা অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছি। আরেকজন আ জ ম নাছির তৈরি করতে অনেক বছর সময় লাগবে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস করেন, মেয়র পদ না পেয়ে আমি কোনোভাবে হতাশ, বিক্ষুব্ধ বা নিরাশ হয়নি। তবে একটি বিষয় আমাকে কষ্ট দিয়েছে। যে সংগঠনের জন্য জীবন-যৌবন দিয়েছি, তারাই আমাকে বঙ্গবন্ধুর খুনির দোসর বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে। অথচ আমি প্রথম পরিকল্পনা করে বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল (অব.) রশিদের সভায় হামলা চালিয়েছিলাম। ফ্রিডম পার্টির নেতাকর্মীদের খুঁজে বের করে চট্টগ্রাম থেকে তাড়িয়ে ছিলাম। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে ৭৬ সালের জানুয়ারী মাসে সর্বপ্রথম আমরা ৫-৬ জন মিছিল করেছিলাম।’
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিতরণের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ দলের কর্মীরাই একটি ছবি প্রকাশ করেন। এই ছবি প্রকাশ করে প্রচারণা চালানো হয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মেয়র নাছিরের দীর্ঘদিন ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে।
এ প্রসঙ্গে আ জ ম নাছির বলেন, ‘তিনদিন আগে একজন আমাকে ফেসবুকে দেখাল আমি নাকি যুদ্ধাপরাধীর পরিবারের সঙ্গে আঁতাত করেছি। আকরাম খান নামে যাকে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদের পরিবারের সদস্য বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে আমার অনেক পুরোনো পরিচয়। ’৯৪ সালে একটি চরম দুঃসময়ে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। তখন তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তিনি এখন তার এলাকার আওয়ামী লীগের সভাপতি। আমি একটা ঘরে লাগাতার দেড়-দুই মাস বন্দি ছিলাম। এমনকি অনেকদিন সূর্যের মুখ দেখিনি। শুধু খাবারটা দিয়ে যাওয়া হতো।’
‘আমি অক্সিজেন এলাকায় তার একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করেছিলাম। এ সময় কারা আমার পেছনে ছিল বা কে বঙ্গবন্ধুর খুনি সুলতান শাহরিয়ার রশিদের পরিবারের সদস্য তা আমার জানা ছিল না। তাদের সঙ্গে আমার দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। এ অপরাজনীতি আমাকে কষ্ট দিয়েছে।’
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি মো. আলী, সাধারণ সম্পাদক ম. শামশুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, শহিদুল আলম, মহসিন চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক ও প্রতিদিনের সংবাদের উপ-সম্পাদক কাজী আবুল মনসুর প্রমুখ।