অনলাইন ডেস্ক : সমুদ্র ও অন্যান্য জলজ সম্পদের টেকসই ব্যবহারে বৈশ্বিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য তিন দফা প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৩ জুন) রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ‘ভার্চুয়াল মহাসাগর সংলাপ’এ বক্তব্য রাখেন।
‘ওশান অ্যাকশন ভবিষ্যতের প্রজন্মকে সবল করে গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আসুন আমরা হাতে হাত রেখে সমুদ্র অ্যাকশনের জন্য আমাদের প্রতিশ্রতির নবায়ন করি,’ সংলাপের আজকের ‘শতকোটির পুষ্টি’ শীর্ষক অধিবেশনে তিনি একথা বলেন।
এসময় বিশ্ব সম্প্রদায়কে সমুদ্রকর্মকাণ্ডে তাদের প্রতিশ্রুতি নবায়নের আহ্বানও জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাসাগরের এবং অন্যান্য জলজ সম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিতের জন্য, বিশেষ করে আমাদের সম্পদ এবং পণ্যের বাজারে প্রবেশ এবং প্রযুক্তি সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম প্রস্তাবে, সামুদ্রিক সম্পদের পরিপূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় সম্পদ, সক্ষমতা ও প্রযুক্তিসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করার আহ্বান জানান।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে তিনি, আঞ্চলিক মাছের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি এবং অবৈধ, অননুমোদিত ও অনিয়ন্ত্রিত মাছ নির্মূল বন্ধের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মৎস্য উন্নয়ন বিষয়ে যৌথ গবেষণা পরিচালনার ওপর জোর দেন।
তৃতীয় প্রস্তাবে শেখ হাসিনা, উপকূলীয় বাসস্থান ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় মাছের উৎস চিহ্নিতকরণ এবং এর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’ এবং ফ্রেন্ডস অব ওশান অ্যাকশনের ব্যবস্থানায় জেনেভায় পাঁচদিনব্যাপী এ সংলাপ গত ১ জুন শুরু হয়েছে। সংলাপের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘মহাসাগরীয় স্থিতিস্থাপকতা,উদ্ভাবন এবং কর্মের জন্য জনগোষ্ঠীগুলোকে সংযুক্ত করা।’
করোনাভাইরাসের মহামারি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এ সভাটি এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন সমগ্র বিশ্ব এ ঘাতক ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
তিনি বলেন, মহাসাগরের এবং মানুষের স্বাস্থ্যের মধ্যে যে যোগসূত্র রয়েছে তা নিয়ে এ মহামারি সবাইকে নতুন করে চিন্তা করতে বাধ্য করেছে। কেননা অসুস্থতা মোকাবিলায় সমুদ্র একটি বড় উৎসের যোগানদাতা।
‘মাছের মজুদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও মারাত্মক উদ্বেগের’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাই, আমাদের স্থায়ীত্বের জন্য টিকে থাকার জটিল ভারসাম্যে আঘাত করতে হবে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তার সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।
‘বিশ্বে বাংলাদেশ মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে রয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ মৎস্য সম্পদ দেশের জনগণের প্রায় অর্ধেক প্রাণিজ প্রোটিনের উৎস।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ‘সুনীল অর্থনীতি’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সামুদ্রিক মৎসজীবীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
অ্যালায়েন্স ফর এ গ্রিন বেভ্যুলুশন ইন আফ্রিকার (এজিআরএ) সভাপতি আগ্নিস মাতিলডা কালিবাটা, ফোর এসডির পরিচালক ডেভিড নাবারো এবং ওয়ার্ল্ড ফিস’র ভ্যালু চেইন ও পুষ্টি বিষয়ক রিসার্চ প্রোগ্রাম লিডার শকুন্তলা থিলসটেডও একই অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আগে ধারণ করা ভাষণ সম্মেলনের ‘দি হাই সিজ: অপারেটিং উইথ ইন দ্যা গ্লোবাল কমন্স’ শীর্ষক অপর একটি অধিবেশনে প্রচার করা হয়।
নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এর্না সোলবার্গের ‘সাসটেইনেবল ওশান ইকোনমি’ শীর্ষক বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় একটি অধিবেশনে ভিডিও মেসেজ দেওয়া কথা রয়েছে।
গত ১ জুন ফিজির প্রধানমন্ত্রী জসায়া ভোরিগ বাইনিমারামা’র ভিডিও মেসেজ প্রচারের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়।
সূত্র: বাসস