নিজস্ব প্রতিবেদক: সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ গতকাল বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত সাতক্ষীরা ও খুলনার কয়রা এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজ এবং খুলনার কয়রায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামত ও আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সেবায় নিয়োজিত সেনাসদস্যদের উদ্দেশ্যে দিক নিদের্শনামূলক বক্তব্য দেন। তিনি সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে উপস্থিত স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
সেনাপ্রধান সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে সেনাসদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সহায়তা দিতে আমরা এসেছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করতে আসিনি। এখানে কারো ওপর চড়-থাপ্পড় দেওয়া যাবে না। সকলের সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে আমরা মানবিক কাজে এখানে এসেছি।’
এ সময় তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আগে নিজেকে সুস্থ থাকতে হবে। একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে আমরা কাজ করছি। করোনার কারণে প্রটেকশন নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। যদি করোনা না থাকত তাহলে সেনা সদস্যরা লুঙ্গি গামছা পরে কাজে নেমে পড়ত। তবে করোনার কারণে সেটি হচ্ছে না। দুর্যোগে কিভাবে কাজ করতে হয় সেনা সদস্যরা সেটি জানেন। করোনা ম্যানেজমেন্ট কিভাবে করতে হবে সেগুলো সেনা সদস্যদের আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ক্রান্তিকালে যে সকল সেনা জনগণের পাশে রয়েছে জনগণ তাদের মনে রাখবে।
উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ রক্ষার ব্যাপারে সেনাপ্রধান বলেন, উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ রক্ষার কাজ করে যাচ্ছে সেনা সদস্যরা। মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল বাঁধ রক্ষার কাজ সেনাবাহিনীকে দিলে সেনাবাহিনী করবে কি না? আমরা বলেছি, সরকারের দেওয়া কাজ করতে সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। এটিকে আমরা গর্ব মনে করি। কিভাবে কাজগুলো করলে সুন্দর হবে এখন সেটি আমরা পরিকল্পনা করছি। বাঁধ রক্ষায় এই মুহূর্তে লক দরকার, বাঁশসহ অন্যান্য সারঞ্জামাদি দরকার হবে। সব কিছু পর্যাপ্ত পাওয়া নাও যেতে পারে। তবুও আমরা চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করতে সব সময় প্রস্তুত রয়েছে। আমরা যে কাজটি করব সেটি চেষ্টা করব ভালোভাবে করার। জনগণের সেনাবাহিনীর ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমাদের প্রয়োজন স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা। সেটি যদি আমরা পাই তাহলে কাজটি আমরা ভালোভাবে করতে পারব।
দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহায়তার বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, বর্তমান পর্যন্ত ৪৬০টি ঘর আমরা সংস্কার করে দিয়েছি। ১০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহযোগিতা দিয়েছি। খাবারের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকেও অনেক কিছু করা হচ্ছে। আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে তারপরও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আমাদের ১৬টি পানি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট রয়েছে। এর মধ্যে উপকূলে পানি সংকট নিরসনের জন্য তিনটি ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে।
এ সময় সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) লে. জেনারেল মো. সামছুল হক, ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, সেনাসদর অপারেশন্স পরিদপ্তরের পরিচালক, সেনাসদর গোয়েন্দা পরিদপ্তরের পরিচালক, সেনাপ্রধানের এমএ এবং আইএসপিআরের পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।