নিউজ ডেস্ক: জাতীয় সংসদের তিনটি আসন বর্তমানে শূন্য; ঢাকা-৫, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১। এগুলোতে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি এখনও।
কিন্তু প্রার্থীদের মধ্যে তৎপরতা শুরু গেছে। আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে এসব আসনের প্রয়াত এমপিদের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, প্রয়াতদের পরিবারের সদস্যদের মনোনীত করার সম্ভাবনা বেশি।
ইতোমধ্যে আসনগুলোতে দলের প্রার্থী মনোনয়ন পাওয়ার জন্য অনেক আওয়ামী লীগ নেতা এবং ব্যবসায়ী দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। একইসঙ্গে নির্বাচনী এলাকাতেও ভোটারদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ চলছে। তবে দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, প্রয়াতদের পরিবারের সদস্যরা অগ্রাধিকার পাবেন।
প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান মোল্লা গত ৬ মে মারা গেলে তার আসন ঢাকা-৫ শূন্য হয়। এরপর গত ১৩ জুন সিরাজগঞ্জ-১ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম মারা যান। সর্বশেষ গত ৯ জুলাই আওয়ামী লীগের সভাপতিণ্ডলীর আরেক সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন মারা গেলে ঢাকা-১৮ আসন শূন্য হয়। এসব আসনে সংবিধান অনুযায়ী উপ-নির্বাচন হবে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব আসনের উপ নির্বাচনে প্রার্থী হতে বেশ কয়েক নেতা যোগাযোগ ও তৎপরতা শুরু করেছেন। বিশেষ করে ঢাকা দুই আসনে। ঢাকা-১৮ আসনে মনোনয়নের জন্য আট থেকে ১০ জন প্রত্যাশী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী নেতারাও রয়েছেন। ঢাকা-৫ আসনেও আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ীরা তৎপরতায় রয়েছেন।
ঢাকা-৫ আসনে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে এই আসনের প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে ও ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজলের পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এছাড়া অন্য যারা আলোচনায় আছেন, তারা হলেন, ডেমরা থানার সভাপতি রফিকুল ইসলাম খান মাসুদ, আমলিয়া মডেল টাউনের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিক, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনু, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মেহেরিন মোস্তফা দিশি প্রমুখ।
সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপ-নির্বাচনে এই আসনের প্রয়াত এমপি মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভির শাকিল জয়ের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। তিনি জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ মনসুর আলীর নাতি। এছাড়া ২০০৮ সালে মোহাম্মদ নাসিম নির্বাচন করতে না পারায় জয়কে এই আসনের মনোনয়ন দেওয়া হয় এবং তিনি নির্বাচিত হন।
ঢাকা-১৮ আসনে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে এই আসনের প্রয়াত এমপি সাহারা খাতুনের ভাইয়ের ছেলে শহীদ সারোয়ার হোসেনের নাম রয়েছে। এছাড়া এই আসনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক এমপি ও প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বিগত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবীব হাসান, বিজিএমই-এর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা তোফাজ্জল দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, দলের সংসদীয় বোর্ড প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। যারা এই আসনগুলোতে নির্বাচন করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন, তাদের প্রত্যেককে ইতোমধ্যে এলাকায় গিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকেই বোর্ড থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ফারুক খান বলেন, অনেকেই মনোনয়নের জন্য যোগাযোগ করছেন। আমরা সবাইকে এলাকার জনগণের মধ্যে কাজ করতে বলেছি। দলের জন্য যে নিবেদিত, জনগণের মধ্যে যার গ্রহণযোগ্যতা বেশি, তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, যেহেতু আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়নি, তাই এখনই বলা কঠিন এসব আসনে কারা মনোনয়ন পাবেন। তবে অনেকেই নির্বাচন করতে চান। দলীয় মনোনয়নের জন্য তৎপরতা শুরু করেছেন। তাদের ভেতর থেকে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা যাকে যোগ্য বিবেচনা করবেন, সে-ই মনোনয়ন পাবেন।