আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত সপ্তাহে চীনা সংবাদমাধ্যম সিজিটিএনের প্রখ্যাত অস্ট্রেলিয়ান উপস্থাপিকা চেং লেইকে বিনা অভিযোগে আটক করে চীন। ওই ঘটনার পর চীনে অবস্থানরত নিজ দেশের নাগরিকদের চলাফেরায় সতর্কতা অবলম্বন করতে বলে অস্ট্রেলিয়া সরকার। এবার চীন থেকে তাদের সাংবাদিকদের দেশে ফিরিয়ে নিলো দুই অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম, এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (এবিসি) রিপোর্টার বিল বার্টলস ও অস্ট্রেলিয়ান ফিন্যান্সিয়াল রিভিউয়ের (এএফআর) মাইক স্মিথ মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) সিডনিতে পৌঁছে গেছেন। বিমানে ওঠার আগে চীনা কর্তৃপক্ষ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে এবিসি বলছে, ‘চীনে তার রিপোটিং ও আচরণবিধির কারণে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হননি বার্টলস।’
অস্ট্রেলিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিসে পেইন বলেছেন, কনস্যুলারের কর্মকর্তারা ওই সাংবাদিকদের পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। মঙ্গলবার এক বিবৃতি দেন তিনি, ‘তাদের নিরাপদে দেশে ফেরা নিশ্চিত করতে চীন সরকারের সঙ্গে কাজ করেছে আমাদের বেইজিংয়ের দূতাবাস ও সাংহাইয়ের কনস্যুলেট।’
এএফআর প্রতিবেদনে বলেছে, গত মাসে আটক হওয়া উপস্থাপিকা চেং লেই সম্পর্কে সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল চীনা কর্তৃপক্ষ। এবিসির রিপোর্ট, এই অবস্থায় গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ান কূটনীতিকরা বার্টলস ও এবিসিকে বুঝিয়েছেন যে এখনই তার চীন ছাড়া উচিত। এর পর গত বৃহস্পতিবার বেইজিং ছাড়তে ফ্লাইট বুক করেন বার্টলস।
এবিসি বলেছে, কিন্তু বুধবার মধ্যরাতে সাতজন চীনা পুলিশ কর্মকর্তা বার্টলসের বাসায় যান, যখন তিনি বন্ধুদের সঙ্গে বিদায়ী ভোজে ব্যস্ত ছিলেন। ওই কর্মকর্তারা তাকে দেশ ছাড়তে বারণ করেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে পরে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে জানান তারা।
ওই ঘটনার পর তখনই অস্ট্রেলিয়ান কনস্যুলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বার্টলস। তারা তাকে অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসে নিয়ে যান, সেখানেই ছিলেন পরের চারদিন। এই সময়ের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত গ্রাহাম ফ্লেচারের উপস্থিতিতে চীনা কর্মকর্তারা তাকে বার্টলসকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সাংহাইয়ে অবস্থিত কনস্যুলেটে চেং লেই সম্পর্কে প্রশ্নের মুখোমুখি হন স্মিথও। আরও প্রশ্ন করা হলে তারা জবাব দিতে বাধ্য থাকবেন, এই শর্তে পুলিশ তাদের দেশ ছাড়ার অনুমতি দেয়।
চীনে কর্মরত শেষ দুই অস্ট্রেলিয়ান করেসপন্ডেন্ট বার্টলস ও স্মিথ, যারা দেশে ফিরে গেলেন। তাতে ১৯৭০ সালের মাঝামাঝি সময়ের পর প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ান অ্যাক্রিডিটেড কোনও সাংবাদিক না থাকার ঘটনা ঘটলো চীনে।