ডেস্ক : জান্নাতুল জেরিন ও মহসিনুজ্জামান প্রতীককে দেখে মনে হবে যে কোন সাধারণ দম্পতি। এলাকায় নিজেদের পরিচয় দিতেন স্বামী-স্ত্রী হিসেবে। সবুজবাগে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে ভারতে নারী পাচার করতেন। তরুণীদের মালয়েশিয়ায় চাকরি ও আয়েশী জীবনের কথা বলে, পাঠাতেন ভারতে, পরে বিক্রি করে দিতেন মুম্বাইয়ের পতিতালয়ে। এভাবে গত ৫ বছরে অর্ধশতাধিক তরুণীকে পাচার করেছে চক্রটি। এ পর্যন্ত তাদের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
জেরিন ও প্রতীক দুজনেই শ্রমিক হিসেবে দুবাই যান ২০১৪ সালে। সেখানেই পরিচয়ের পর প্রেম। পরে মালয়েশিয়া, দুবাই ও ভারতে নারী পাচারকারীদের সঙ্গে গড়েন সখ্য। পরিকল্পনা করেন ভারতে নারী পাচারের। দেশে ফিরে বিয়ে না করলেও স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা বাড়া নেন সবুজবাগের নয়াবাগে।
এখানেই তৈরি করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তবে পাচারের জন্য তরুণী সংগ্রহ করতেন নিজেরাই। মালয়েশিয়ায় পড়ালেখা ও চাকরির প্রলোভনে রাজি হলে, চেতনানাশকে অজ্ঞান করে, যশোর নিয়ে যেতেন তাদের গাড়িচালক শাহীন। রাখা হতো চক্রের আরেক সদস্য রফিকুলের বাড়িতে। আর সীমান্তে পৌঁছে দিতেন বিপ্লব। নৌকায় সীমান্ত পার করে দিতেন আক্তার।
২০১৯ সালে সবুজবাগের ভাড়া বাসার মালিকের মেয়েকে পাচারের চেষ্টা করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে বিষয়টি। প্রতীক-জেরিনসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার পর উন্মোচিত হয় পুরো ঘটনা।
সিআইডির এডিশনাল ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার জানিয়েছেন, ৫ বছর ধরে নানা কৌশলে তরুণীদের ভারতে পাচার করছিল চক্রটি। পরে ১ থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হতো মুম্বাইয়ের পতিতালয়ে।
এ ধরণের চক্রের হাত থেকে বাঁচতে, কারো বিদেশে পাঠানোর প্রলোভনে পা দেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন পুলিশ।