রাজধানীর কাফরুল থানায় করা অর্থপাচার মামলায় ফরিদপুরের দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত এবং ইমতিয়াজ হোসেন রুবেলের ১৮৮টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে ৪৮৭ তফসিলের সম্পত্তিও জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অনুসন্ধানে দুই ভাইয়ের ৪৮৭টি দলিলের ৫ হাজার ৭০৬ বিঘা জমি, ১৮৮টি ব্যাংক হিসাবের পৌনে দশ কোটি টাকা এবং ৫৫টি গাড়ির সন্ধান পায়। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা এসব সম্পদ জব্দের আবেদন জানায়। শুনানি শেষে বিচারক বরকত ও রুবেলের ওই সব সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেন।’
গেল বছরের ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় অর্থপাচারের অভিযোগ বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন সাজ্জাদ ও ইমতিয়াজ। এ ছাড়া মাদক ব্যবসা, ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ করেছেন তারা। এসি, নন-এসিসহ ২৩টি বাস, ড্রাম ট্রাক, বোল্ডার, পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। টাকার উল্লেখযোগ্য অংশ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেন তারা।
এজাহারে আরও বলা হয়, প্রথম জীবনে এই দুই ভাই রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে এক বিএনপি নেতার ফরমায়েশ খাটতেন। তখন তাদের সম্পদ বলতে তেমন কিছুই ছিল না।
এজাহারে আরও বলা হয়, গত বছরের ১৮ জুন তিনি (এস এম মিরাজ) এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়ে তদন্ত শুরু করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই দুই ভাই অন্তত দুই হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন করেছেন।
গত ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। সুবল সাহার বাড়ি শহরের গোয়ালচামট মহল্লার মোল্লা বাড়ি সড়কে। এ ঘটনায় গত ১৮ মে সুবল সাহা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা করেন। গত বছরের ৭ জুন রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার মামলার আসামি হিসেবে শহরের বদরপুরসহ বিভিন্ন মহল্লায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ সাজ্জাদ হোসেন, তার ভাই ইমতিয়াজ হাসানসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।