গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী বাজারের এক গুদাম থেকে পাঁচটি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাংবাদিক পরিচয়দানকারী তিন যুবক ও এক নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
হেফাজতে নেয়া সাংবাদিক পরিচয়দানকারীরা হলো, দিনাজপুর জেলার সদর উপজেলার মধ্যে বালুবাড়ী গ্রামের মৃত সাজ্জাদ আলীর ছেলে মো: তানভীর আহম্মেদ (৪০), বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানাধীন আফালকাটি গ্রামের শেখ মো: রুহুল আমীনের ছেলে শেখ মাহমুদুল হাসান (৩১), নাটোর জেলার লালপুর থানার টিটিআই লালপুর গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে মাহমুদুর রহমান (২৫) ও বরগুণা জেলার পাথরঘাটা থানার গেয়ানপাড়া গ্রামের বসিরুল হক বাদলের মেয়ে রহিমা আক্তার মুক্তা (২৪)।
বাজারের ব্যবসায়ী কফিল উদ্দিন বলেন, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে অপরিচিত এক ব্যক্তি চুন কেনার কথা বলে দরদাম ঠিক করেন এবং হাতে থাকা বাজারের ব্যাগ আমার দোকানে রেখে বিশ মিনিট পর এসে চুন ও ব্যাগ নিবেন বলে জানান। এর আধঘন্টা পর এক নারীসহ তিনযুবক সাংবাদিক পরিচয়ে এসে দোকানের বিভিন্ন জায়গা তল্লাশি শুরু করেন। পরে ওই ব্যক্তির রেখে যাওয়া ব্যাগটি তল্লাশি করে ককটেল পাওয়ার কথা জানিয়ে ছবি উঠানো শুরু করেন। এর এক পর্যায়ে তারা বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে আট লাখ টাকা দাবি করেন। এসময় আশপাশে থাকা অন্যান্য ব্যবসায়ীরা এসে ভিড় করেন।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সাংবাদিক মো: রাকিবুল হাসানের সহায়তায় তারা আমাকে ফাঁসানোর জন্যই দোকানে ককটেল রেখে টাকা দাবি করেছিল। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসলে রাকিব ঘটনাস্থল ত্যাগ করে এবং বাকীরা ককটেল উদ্ধারের বিষয়টি পুলিশে জানান।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নয়ন ভুইয়া জানান, জাতীয় সেবা নম্বর ৯৯৯ এ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুরো ঘটনাটি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। পরে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন অসঙ্গতি পাওয়ায় তাদের পুলিশী হেফাজতে থানায় নিয়ে যান।
বরমী বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, কফিল উদ্দিন প্রায় ৫০বছর যাবৎ এ বাজারে পান-চুনের ব্যবসা করে আসছেন। বাজারে শান্তশিষ্ট লোক হিসেবে তাঁর পরিচিতি বেশি। তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের অভিযোগ এ পর্যন্ত কেউ করেননি।
আজকের আলোকিত সকালের সম্পাদক ও প্রকাশক মো: মোখলেছুর রহমান বলেন, পুলিশী হেফাজতে থাকা তানবীর বিশেষ প্রতিনিধি, শেখ মাহমুদুল হাসান, মাহমুদুর রহমান ও রহিমা আক্তার মুক্তা স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত আছেন। আলোকিত সকালের শ্রীপুর প্রতিনিধি মো: রাকিবুল হাসান সংবাদ সংগ্রহের জন্য তাদের ওই এলাকায় নিয়েছিলো। তাদের চাঁদাবাজির ঘটনাটি আমি মুঠোফোনের মাধ্যমে জেনেছি। তাদের ব্যক্তিগত অপরাধের দায় কখনোই প্রতিষ্ঠান নিবে না।
বরগুণার পাথরঘাটা উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজি রাকিব বলেন, মুক্তা ও তার সহযোগীরা নাচনাপাড়া এলাকার একটি মাদ্রাসায় চাঁদা দাবী করে। আমি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে তাদেরকে চাঁদা দিতে নিষেধ করি এবং স্থানীয় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করি। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে খেয়ে ফেলার এবং জীবননাশের হুমকি প্রদান করলে। বিষয়টি পাথরঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। এ ছাড়াও স্থানীয় অনলাইন পোর্টাল পাথরঘাটা নিউজ এর সম্পাদক নাজমুন্নাহার সুখী এবং নাচনাপাড়া হাফিজি মাদ্রাসা কমিটির পক্ষ থেকেও থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল।
গাজীপুর জেলা পুলিশের কালিয়াকৈর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আল-মামুন জানান, ককটেল উদ্ধারের খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দোকান মালিক, সাংবাদিক ও বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলা হয়। পরে সাংবাদিকদের কথায় অসঙ্গতি পাওয়ায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। এবিষয়ে হেফাজতে নেয়া সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।