সময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরী হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিল শেখ রাসেল।বাড়ির ছোট সন্তান হিসেবে সে ছিল সবার আদরের। রাজনৈতিক পরিবেশ ও সংকটের মধ্যেও রাসেলের প্রিয় সঙ্গী ছিল তার সাইকেল। সারাক্ষণ সাইকেল নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখতো সে। ১৯৭১সালের উত্তাল রাজনৈতিক পরিবেশ ছোট্ট রাসেলের মনেও জন্ম দেয় স্বাধীনতা বোধ। সে সময় পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি পিতাকে কাছ থেকে দেখতে না পাওয়ায়- এর প্রভাব পড়েছিল রাসেলের মনে।
শেখ হাসিনা ও বেবী মওদুদের লেখা ‘১৫ আগস্ট ১৯৭৫’ বইয়ে উল্লেখ আছে, ‘১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধকালীন দীর্ঘ নয় মাস পিতার অদর্শন তাকে এমনই ভাবপ্রবণ করে রাখে যে, পরে সবসময় পিতার কাছাকাছি থাকতে জেদ করতো।’
এই বই থেকে জানা যায়, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সবাইকে হত্যা করে তাদের লাশ দেখিয়ে তারপর রাসেলকে হত্যা করা হয়। তাকে কাজের লোকজন বাড়ির পেছনের সিঁড়ি দিয়ে নিচে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। ঘাতকরা দেখে ফেলেছিল রাসেলকে। ছোট্ট রাসেলের বুকে গুলি চালানোর আগে ওয়ারলেসের মাধ্যমে অনুমতি নেয়া হয়েছিল। প্রথমে রাসেল তার মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিল। তখন ধানমণ্ডির বত্রিশ নম্বর বাড়ির মেঝেতে পড়ে আছে তার মায়ের লাশ।
মায়ের লাশ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখার পর রাসেল কেঁদে ফেলে। কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বলে উঠেছিল ‘আমাকে হাসু আপার কাছে পাঠিয়ে দিন’।