রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর রাজপরিবারের নিয়ম অনুযায়ী বৃটেনের রাজা নির্বাচিত হয়েছেন তার ছেলে চার্লস তৃতীয়। অনানুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বগ্রহণের পর ব্রিটিশ জাতি ও কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর উদ্দেশ্যে স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে প্রথম ভাষণ দেন তিনি।
বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় তার এ ভাষণটি সরাসরি টিভিতে সম্প্রচারা করা হয়।
ভাষণে রাজা তৃতীয় চার্লস বলেন, যেভাবে রানি নিজে অটল নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন আমিও এখন দৃঢ়তার সঙ্গে নিজের কাছে অঙ্গীকার করছি, ঈশ্বর আমার জন্য বাকি যেটুকু সময় বরাদ্দ রেখেছেন, পুরোটাজুড়ে আমি আমাদের দেশের হৃদয়ে সংবিধানের নীতিকে সমুন্নত রাখবো।
তিনি আরো বলেন, আপনি যুক্তরাজ্যের সেখানেই বসবাস করুন বা আমাদের যে রাজ্যে বা বিশ্বের যেকোনো অঞ্চলে এবং আপনি যেখান থেকেই আসুন বা আপনার বিশ্বাস যাই হোক, আমি আমার সারাজীবন ধরে বিশ্বস্ততা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে আপনাদের সেবা করে যাওয়ার চেষ্টা করবো।
রাজা চার্লস বলেন, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ দারুণ একটা জীবন পার করেছেন। তিনি সবসময় লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমরা গভীর মর্মাহত।
তিনি আরো বলেন, বুকে অনেক কষ্ট নিয়ে আপনাদের সামনে কথা বলছি। পুরো রাজপরিবারের পক্ষ থেকে আমি গভীর শোকানুভূতি নিয়ে আপনাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছি। আমার মা যে অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে তার রাজত্বের সূচনা করেছিলেন, আমিও নতুন করে সেই একই অঙ্গীকার করছি।
চার্লস বলেন, সারাটা জীবন ধরেই মহামান্য রানি, আমার প্রিয় মা এবং পুরো পরিবারের জন্য অনুপ্রেরণা ও উদাহরণ। তার কাছে আমরা আন্তরিকভাবে ঋণী। ভালোবাসা, স্নেহ, বোঝাপড়া ও পথ-নির্দেশনার জন্য যেকোনো পরিবার তাদের মায়ের কাছে ঋণী হতে পারে।
চার্লস বলেন, কেপটাউন থেকে ১৯৪৭ সালে ২১তম জন্মদিনে কমনওয়েলথের একটি সম্প্রচারে মা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি তার জীবন নিজের জনগণের সেবায় কাটিয়ে দেবেন। এটি প্রতিশ্রুতির চেয়েও বেশি কিছু ছিল। এটি একটি গভীর ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতি যা তার পুরো জীবনকে সংজ্ঞায়িত করেছিল।
লন্ডনের সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল গির্জায় প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্য প্রার্থনা ও শ্রদ্ধা জানানোর অনুষ্ঠানেরও অংশ ছিল এ ভাষণ। এ গির্জার দুই হাজার আসন সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত ছিল।
উল্লেখ্য, ৮ সেপ্টেম্বর স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। লন্ডনের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বিবৃতি দেয় বাকিংহাম প্যালেস। ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় (৭০ বছর) সিংহাসনে ছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। কয়েক মাস আগেও তার সিংহাসনে আরোহনের ৭০ বছর উদযাপন করা হয়।