টেলিভিশন উপস্থাপিকা স্ত্রীকে হত্যার দায়ে এক বিচারক ও তার সহযোগীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমতি দিয়েছেন মিশরের গ্র্যান্ড মুফতি।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মিশরের সরকারি গণমাধ্যম আল-আহরাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে মিশরের ফৌজদারি আদালত এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিচারক আয়মান হ্যাগাগ এবং তার সহযোগী ব্যবসায়ী হুসেইন আল-গারাবলিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন।
এখন দেশটির শীর্ষ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ অনুমোদন করার পর হ্যাগাগ এবং গারাবলিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দু’জন জুন মাসে হ্যাগাগের স্ত্রী শায়মা গামালকে হত্যা করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। শায়মা মিসরের গিজা শহরভিত্তিক এলটিসি টিভিতে একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতেন।
আল-গারাবলির কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর শায়মার লাশ একটি ভিলায় পাওয়া যায়। তিনি অপরাধে তার ভূমিকার কথা স্বীকার করেছিলেন।
এই ঘটনার তিন সপ্তাহ আগে হ্যাগাগ জানিয়েছিলেন তার স্ত্রী নিখোঁজ।
আদালতের বিবৃতি অনুসারে, বাস্তবে বিচারক হ্যাগাগ তার স্ত্রীকে সেই প্রত্যন্ত ভিলায় যাওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করেছিলেন এবং সেখানে তিনি ইতিমধ্যে একটি কবর খনন করে রেখেছিলেন। এরপর আল-গারাবলির সহায়তায় তিনি শায়মার মাথায় আঘাত করেন এবং শ্বাসরোধে হত্যা করেন। তারা মৃতদেহটি কবরে রেখে তার ওপর রাসায়নিক উপাদান ঢেলে দেন, যাতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা লাশ শনাক্ত করতে না পারেন।
হ্যাগাগ দাবি করেছেন, তার স্ত্রী তাকে ব্ল্যাকমেইল করেছিলেন। এবং তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করার পর আত্মরক্ষার জন্য তিনি তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন।
কিন্তু বিচারকরা উল্লেখ করেছেন, অপরাধের স্থানে কোনো ছুরি পাওয়া যায়নি এবং হ্যাগাগ তার স্বীকারোক্তিতে আত্মরক্ষার কথা বলেননি। অন্যদিকে আল-গারাবলির স্বীকারোক্তিতেও হ্যাগাগের আত্মরক্ষার কথা পাওয়া যায়নি।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা চাইলে ৬০ দিনের মধ্যে মিসরের আদালতে আপিল করতে পারবেন বলে জানা গেছে।
এটি এখন পর্যন্ত মিসরের জনপ্রিয় নারীদের হত্যাকাণ্ডের সর্বশেষ ঘটনা। এ বছরের ১৯ জুন ২১ বছর বয়সী মিসরীয় শিক্ষার্থী নায়েরা আশরাফকে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় হত্যা করেছিলেন এক ব্যক্তি এবং আরেকজন ২১ বছর বয়সী সালমা বাহজাত সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য খুন হয়েছিলেন।
সূত্র: আল-আরাবিয়া