বায়ার্ন ছেড়ে বার্সায় যোগ দিয়ে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটানো ক্লাবে ফেরা, রাঙিয়ে দেওয়ার উপলক্ষ ছিল রবার্ট লেভানডোভস্কির সামনে। বায়ার্ন গোলকিপার ম্যানুয়েল নয়্যার একবার অসতর্ক হয়ে পাসটা প্রায় বাড়িয়েই দিয়েছিলেন! তখন যেমন হয়নি তেমনি এর চেয়ে সহজ সুযোগ পেয়েও লেভা কাজে লাগাতে পারেননি।
বায়ার্ন সুযোগ ছাড়বে কেন! প্রথমার্ধে ঠিক বায়ার্নসুলভ ফুটবল খেলতে না পারলেও, বিরতির পর ঠিকই সাম্প্রতিককালের ধারা বজায় রাখে জার্মান ক্লাবটি। আবারও বার্সার হার, বায়ার্নের জয়। মিউনিখে এবার ২-০ ব্যবধানে।
প্রথমার্ধে তুলনামূলক ভালো খেলেও গোল পায়নি বার্সা। দু’টি সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন লেভানডোভস্কি। ২১ মিনিটে তার হেড অবিশ্বাস্যভাবে সেভ করেন বায়ার্নের গোলকিপার ও অধিনায়ক নয়ার। পরে নয়ারকে একা পেয়েও পোস্টের বাইরে মেরেছেন। প্রথমার্ধেই গোলের তিনটি ভালো সুযোগ পেয়েছিল বার্সা। কাজে লাগাতে না পারার মাশুল গুণতে হয় বিরতির পর। ৫০ থেকে ৫৪, এই পাঁচ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে বসে বায়ার্ন!
জশুয়া কিমিখের কর্নার থেকে ৫০ মিনিটে লুকা হার্নান্দেজের প্রথম গোলে রক্ষণকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারেন বার্সা কোচ জাভি হার্নান্দেজ। মার্কোস আলোনসো, আন্দ্রেস ক্রিস্টেনসেন ও রোনাল্ড আরাউহোর মতো উচ্চতায় লম্বা ডিফেন্ডার নিয়ে রক্ষণ সাজান জাভি। সেটপিসে টমাস মুলার, সাদিও মানেদের দক্ষতা তার জানা ছিল। কিন্তু কিমিখের কর্নার থেকে হার্নান্দেজ কোনো বাধা ছাড়াই হেডে গোল করেছেন।
চার মিনিট পরই মাঝ মাঠ থেকে বল টান দেন জামাল মুসিয়েলা। বায়ার্নের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারকে কেউ আটকাতে পারেননি। বক্সের কাছাকাছি গিয়ে তার পাস ধরে ফেলেন লেরয় সানে। বার্সা গোলকিপার আন্দ্রে টের স্টেগেন এগিয়ে এলেও তাকে ফাঁকি দিতে ভুল হয়নি বায়ার্ন ফরোয়ার্ডের। লেভা ও পেদ্রির মুখে তখন রাজ্যের হতাশা।
ম্যাচে ৯ মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন বার্সা মিডফিল্ডার পেদ্রি। তার শট নয়ার বাঁ পা দিয়ে কোনোভাবে রুখে দেন। তবে ১৮ মিনিটে নয়ারকে একা পেয়েও লেভা পোস্টের বাইরে উড়িয়ে মারায় রসিকতা হতেই পারে, সাবেক ক্লাব বলেই হয়তো…।
পিছিয়ে পড়ার পর গা ঝাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে বার্সা। পেদ্রির কপাল খারাপ, ৬৩ মিনিটে পোস্টে বল মারেন। উসমান দেম্বেলে ও রাফিনিয়াকে তুলে আনসু ফাতি আর ফেরান তোরেসকে নামিয়েও গোল পায়নি বার্সা। বায়ার্নের মাঠে এ নিয়ে ৭ ম্যাচ জয়বঞ্চিত রইল কাতালান ক্লাবটি। ২ ড্র ও ৫ হার। বার্সা এই পথে ৪ গোল করার বিপরীতে হজম করেছে ১৬ গোল।
ম্যাচের ২৬ মিনিটে প্রতিবাদ-পর্বও সেরেছেন বায়ার্নের সমর্থকরা। ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ মারা যাওয়ার পর ইংল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডে খেলা স্থগিত করা হয়। এতে সমর্থকদের কথা ভাবা হচ্ছে না, বুঝিয়ে ‘রেসপেক্ট ফ্যানস’ লেখা ব্যানার উঁচিয়ে প্রতিবাদ জানান স্বাগতিক সমর্থকেরা।
‘সি’ গ্রুপে ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বার্সা। সমান ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বায়ার্ন মিউনিখ। এই গ্রুপ থেকে অন্য ম্যাচে ভিক্টোরিয়া প্লজেনকে ২-০ গোলে হারায় ইন্টার মিলান। ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ইন্টার। সমান ম্যাচ থেকে কোনো পয়েন্ট না পাওয়া প্লজেন তলানিতে।