ইরানের পরিস্থিতি খুবই ‘গুরুতর’ বলে বর্ণনা করেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। বিক্ষোভকারীদের ওপর কর্তৃপক্ষের কঠোর দমনাভিযানের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলে গত দু’মাসের বিক্ষোভে ৩০০’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে তুর্ক বলেন, “গত সপ্তাহে দুই শিশুর মৃত্যুসহ ইরানের বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর দমনাভিযান দেশটির গুরুতর পরিস্থিতিকে সামনে নিয়ে এসেছে।”
সংবাদমাধ্যম জানায়, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থেকে ইরানের এই গুরুতর বিপজ্জনক পরিস্থিতির ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর না করার জন্য ইরান কর্তৃপক্ষের সমালোচনাও করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র লিজ থ্রসেল বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী কঠোরভাবে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ দমন করার কারণে বিক্ষোভকারীর মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে। তিনি নিহতের সংখ্যা ৩০০ এর বেশি বলে উল্লেখ করেন এবং মৃতদেহগুলো আটকে রাখা হচ্ছে এমন খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা চুপ না থাকলে কিংবা মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতি না দেয়া পর্যন্ত মৃতদেহগুলো হস্তান্তর করা হচ্ছে না বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
ইরানের বিক্ষোভে নিহতদের পরিবারগুলো থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে যে, তারা মৃতদেহ মর্গ থেকে আনতে গেলে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন গণমাধ্যমকে একথা বলার জন্য যে, নিহতরা পথচারী ছিল কিংবা মিলিশিয়া ছিল, যারা দাঙ্গাকারীদের হাতে মারা গেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) বলেছে, ইরানের বিক্ষোভে নিহতদের মধ্যে অন্তত ৪০ জন শিশু রয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, গত মাসে ইরানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, পুলিশসহ ৪৬ জন বিক্ষোভে নিহত হয়েছেন। দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা মৃত্যুসংখ্যা এর চেয়ে বেশি হওয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
গত সেপ্টেম্বরে পোশাক বিধি লঙ্ঘনের অপরাধে পুলিশের হাতে মারা যান ২২ বছরের তরুনী মাহসা আমিনি। এর পর থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল ইরান। হিজাব বিরোধী এই বিক্ষোভ পরবর্তীতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।