ইতিহাসের সবচেয়ে বড় খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে আফ্রিকার দেশগুলো।
জাতিসংঘ বলছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ-রাজনৈতিক সহিংসতা আর দুর্নীতির মতো সংকটতো ছিলোই তারওপর যোগ হয়েছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ। ফলে শস্য এবং জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট যার শিকার অঞ্চলটির ২৭ কোটির বেশি মানুষ। আর এ সংকটের সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছে শিশুরা।
সোমালিয়ার শরণার্থী শিবিরের এক নারী বলেন, পরপর দুইবার আমার দুই সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে থাকতে হয়েছে। চিকিৎসা জানিয়েছেন খাদ্যের অভাবে তাদের রক্তশুন্যতা দেখা দিয়েছে।
চিকিৎসকরা বলেছেন তাদের পুষ্টিকর খাবার দিতে। কিন্তু ঘরেতো অর্থই নেই আমার সন্তানদের পুষ্টিকর খাবার কোথা থেকে দেবো।
জাতিসংঘ বলছে, চলতি বছর সোমালিয়ায় প্রতিমাসে গড়ে এক হাজারের বেশি শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে অপুষ্টির শিকার হয়ে। যা গেল বছরের চেয়ে দ্বিগুণ। খাদ্য সংকটের কারণেই বেড়েছে শিশুদের অসুস্থ হবার হার। সোমালিয়ার ৫ লাখের বেশি শিশু মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে যার কারণ খাদ্য স্বল্পতা।
বিশ্ব খাদ্য সংস্থা বলছে, পুরো আফ্রিকা অঞ্চলের ২৭ কোটির বেশি মানুষ খাদ্য সংকটে রয়েছে। এরমধ্যে পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোর অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এরমধ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে হর্ন অব আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া এবং জিবুতি।
এ অবস্থায় ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে আফ্রিকা। বলা হচ্ছে এর জন্য জলবায়ুর পরিবর্তন, আফ্রিকার দেশগুলোর সংঘাত, ঋণের বোঝা এবং সরকারি দুর্নীতিই দায়ী। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকেই মুল কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে।
ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক রানিয়া দাগেশ বলেন, যে তহবিল আমরা পাই তা খুবই অপ্রতুল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর অভ্যন্তরিন সংঘাতের কারণে খাদ্য সংকটতো ছিলোই। তারপর চলছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ। ফলে একদিকে বেড়েছে জ্বালানির দাম অন্যদিকে বেড়েছে খাবারের দাম। ফলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এখানকার বাসিন্দারা। যা সামনে আরও বড় রূপ ধারণ করবে।
সূত্র: আল-জাজিরা