বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ২০২২ সালে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য রেকর্ড সর্বোচ্চ ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সংস্থাটির তথ্যমতে, গতবছর দক্ষিণ কোরিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০২১ সালে ছিল দুই দশমিক ১৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ২০২২ সালে বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৭১ শতাংশ।
কোরিয়াতে ২০২২ সালে বাংলাদেশের রফতানি ২২ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিগত ২০২১ সালে ছিল ৫৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশে ২০২১ সালে কোরিয়ার রফতানি ছিল এক দশমিক ৬৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০২২ সালে বেড়ে ৪৪ দশমিক এক শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় দুই দশমিক ৩৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কোরিয়ায় বাংলাদেশের রফতানি ২০০৭ সালে প্রথমবার ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করার পর থেকে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ২০১১ সালে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১৩ সালে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
ঢাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসের তথ্যানুসারে, এটি প্রায় এক দশক ধরে স্থবির থাকার পর দুই দশমিক ৯ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়ে যায়, যা ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির বিরূপ প্রভাবের কারণে ৩৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেকর্ড করেছে।
তবুও এটি ২০২১ সালে ৪০ দশমিক চার শতাংশের ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়ে ৫৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি বড় ঊর্ধ্বগতির সাক্ষী এবং বছরে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২ সালে ৬৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আরেকটি রেকর্ড করেছে।
কোরিয়াতে বাংলাদেশের প্রধান রফতানি আইটেমগুলো হলো আরএমজি, খেলাধুলা এবং অবকাশ যাপনের সামগ্রী এবং ব্রোঞ্জ স্ক্র্যাপস ইত্যাদি। পণ্য ও প্রিয় খাবার যথাক্রমে ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন, ৩ দশমিক ১ মিলিয়নসহ ১৬৮ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ১৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্রোঞ্জ স্ক্র্যাপের রফতানি ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশে কোরিয়ার রফতানি ২০১১ সালে এক দশমিক ৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের শীর্ষে ছিল। প্রায় এক দশক ধরে এক দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন এটি ২০২০ সালে আরো নিচে নেমে এক দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারে ঠেকে। এক দশকের স্থবিরতার পরে বার্ষিক ৫৮ দশমিক তিন শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২১ সালে এটি অবশেষে এক দশমিক ৬৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উঠে আসে। পরে ৪৪ দশমিক এক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালে দুই দশমিক ৩৫৭ বিলিয়ন হয়।
এছাড়া ২০২১ এবং ২০২২ সালে বাংলাদেশে কোরিয়ার রফতানি বৃদ্ধি প্রধানত কোরিয়া থেকে বাংলাদেশের ডিজেল আমদানি বৃদ্ধির নেতৃত্বে ছিল, যা ৭০৩ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২ সালে ৯৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০২১ সালে কোরিয়ার বাংলাদেশে ডিজেল রফতানি ৪৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশে কোরিয়ার অন্যান্য প্রধান রফতানি পণ্যগুলো হলো যন্ত্রপাতি, পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য, ইস্পাত এবং কীটনাশক ইত্যাদি, যেগুলো ২০২২ সালে হ্রাস পেয়েছে।
এটি মূলত ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর দেশে বৈদেশিক রিজার্ভ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আরোপিত আমদানি নিষেধাজ্ঞার কারণে হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।