অনাবাসিকতার তকমা ঘুচিয়ে ২০২২ সালের ১৭ মার্চ উদ্ভোধন করা হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। উদ্ভোধনের এক বছর না গড়াতেই চোখে পড়ছে বেশ কিছু অনিয়ম।
জবি ছাত্রী হলের ছোটো-বড়ো বিভিন্ন সমস্যার মাঝে ছাত্রীদের সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয় খাবারের সমস্যায়। হলের ক্যান্টিনের খাবারের মূল্য রাখা হয় অন্য যে-কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হলের তুলনায় বেশি। কিন্তু সে অনুযায়ী খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে ছাত্রীরা। তাদের অভিযোগে জানা যায়, একদিকে হলের খাবার অস্বাস্থ্যকর, অন্যদিকে খাবার পরিবেশনায় নেই কোনো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানায়, ” আজ আমি হলের রান্না করা খিচুড়ি খেতে গিয়ে খাবারের সাথে পেয়েছি তেলাপোকা”। অন্য আরেকজন শিক্ষার্থীর বক্তব্যে জানা যায়, “খাবারে তেলাপোকা দেখা গেছে, এটা যতটা অস্বাস্থ্যকর, খাবারে ভাতের পঁচা গন্ধ পাওয়াও তেমনি অস্বাস্থ্যকর। হলে খাবারে শুধু তেলাপোকা নয় পঁচা গন্ধও পাওয়া যায়।”
এবিষয়ে হল ক্যান্টিনের ম্যানেজার মোঃ জাহাঙ্গীর পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “তাঁর রান্নাঘরের ছাদে ছাত্রীদের ফেলা আবর্জনার স্তুপ পরিষ্কার করা হচ্ছে না যেখান থেকে এই তেলাপোকার উৎপত্তি।”
অন্যদিকে খাবারের মূল্য বেশি কেন রাখা হয় সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “হল কর্তৃপক্ষ থেকে যদি তিনি ভর্তুকি পাওয়া যায় তবে মূল্য সামঞ্জস্য করা সম্ভব। তাছাড়া সকল দ্রব্যের মূল্যই এখন আগের থেকে অনেক বেশি।”
এসব বিষয় ছাড়াও প্রায় এক মাস ধরে হলের প্রত্যেক ফ্লোরের কিচেনে বন্ধ রয়েছে গ্যাস সাপ্লাই। গ্যাস সাপ্লাই বন্ধের বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিতাস গ্যাস কোম্পানিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা এসে দেখবে কেন গ্যাস সাপ্লাই বন্ধ আছে। আর খাবারের বিষয়ে ক্যান্টিন তদারকির জন্য হাউজ টিউটরদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হবে।রবিবার থেকেই সেটি কার্যকর হবে।”
এদিকে প্রতি ফ্লোরে একজন করে হাউজ টিউটর দায়িত্বে থাকার যে নীতিমালা দেওয়া হয়েছিল তা শুধু কাগজ-পত্রেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। বাস্তবে বেশিরভাগ ফ্লোরের ছাত্রীরাই জানে না তাদের হাউজ টিউটর আসলে কে! হল প্রভোস্ট এই বিষয়ে জানান, “গত বছরের নিয়োগকৃত হাউজ টিউটর অধিকাংশের দায়িত্ব পালনে অপারগতা দেখে আমরা নতুন করে হাউজ টিউটর নিয়োগের পরিকল্পনা করছি।”
এর আগে হল চালুর প্রথমেই সুপেয় খাবার পানির অভাবে গুরুতর অসুস্থ হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। তথ্যগুলো গণমাধ্যমে তুলে ধরার পর টনক নড়ে হল কতৃপক্ষের। প্রতি ফ্লোরে পানির ফিল্টারের ব্যবস্থা করে দেওয়া থাকলে কয়েকদিন পরপর অকেজো হয় ফিল্টারগুলো। কিন্তু ফিল্টার অকেজো হওয়ার খবর একাধিক বার পাঠালেও কোনো সাড়া পাওয়া যায় না বলে জানায় ছাত্রীরা। তাছাড়া সরেজমিনে দেখা যায়, ওয়াশরুমের বেসিন, শাওয়ার, কলসহ অনেক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। কিন্তু দীর্ঘদিনের সেগুলোর হচ্ছে না মেরামত।
এ জাতীয় আরো খবর..