আন্তর্জাতিক ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: জাপানের ওসাকায় জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে আজ শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠকের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমরা একটা বড় ঘোষণা করতে চলেছি, বিরাট বাণিজ্যিক চুক্তি।’
ভারতের গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বলেছেন, ‘বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ মোদির সঙ্গে বৈঠকের আগে গতকালই ট্রাম্প বলেছিলেন, ভারতের উচিত বর্ধিত শুল্ক তুলে নেয়া। এ নিয়ে তিনি মোদির সঙ্গে কথা বলবেন। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পরই ইন্দো-মার্কিন শুল্ক বিবাদে লাগাম টানার জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।
আজ থেকে ওসাকায় শুরু হয়েছে দুইদিনব্যাপী জি-২০ সম্মেলন। সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন টাম্প। ট্রাম্প আগেই বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা বিরাট একটা ঘোষণা করতে চলেছি। বিরাট একটা বাণিজ্যিক চুক্তি। বাণিজ্য ও উৎপাদন ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে আমরা বড় কাজ করছি।’
ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনাটির বিষয়বস্তু ‘বৃহত্তর ক্ষেত্র’ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী মোদিও বলেছেন, ‘প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা এবং অবধারিতভাবেই বাণিজ্য নিয়ে কথা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
অন্য দিকে বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির এই দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকের পর তৎপরতাও শুরু হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখেল সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খুব শিগগিরই উভয় দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী বৈঠক করে এই বিবাদের সুষ্ঠু সমাধানের পথ বের করার চেষ্টা করবেন।’
চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের আমদানি করা বেশ কিছু পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। বিশেষ করে অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টিল আমদানির উপর শুল্ক আরোপ করায় ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এতদিন এসব পণ্য আমদানি করতে ভারতকে কর দিতে হতো না।
মার্কিন প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের ঠিক দুই সপ্তাহ পর গত ১৫ জুন ভারতও পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে আমদানি করে এমন ২৮টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে মোদি সরকার। তারপর থেকেই দুই দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে কিছুটা শীতল ভাব শুরু হয়।
ভারতের এমন সিদ্ধান্তের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘আমরা এত বোকা দেশ নই। ভারতকে দেখুন, বন্ধু দেশ। প্রধানমন্ত্রী মোদি এত ভালো বন্ধু। কিন্তু কী করেছেন! মোটরসাইকেলের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়েছেন। অথচ আমরা এক পয়সাও শুল্ক নিই না।’
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর ভারত শুল্কহার ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। কিন্তু ট্রাম্প তারপরও বলেছেন, তা সত্ত্বেও ওই হার অযৌক্তিক। জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প-মোদির বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল এটাই। তবে বৈঠকের পর ট্রাম্প-মোদির বড় ঘোষণাটা আসলে কী তা জানা না আন্দাজ করা যাচ্ছে এই ইস্যুতো হয়তো সমঝোতায় পৌঁছেছেন দুই নেতা।