সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

২০০ বছরের রেকর্ড ভাঙলো এবারের তাপমাত্রা

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩
  • ৮৬ বার পঠিত

তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো। গত কয়েক দশকে এত তাপমাত্রা দেখেনি এসব দেশ। বুধবার সিএনএন’র খবরে বলা হয়েছে, এ অঞ্চলে গত ২০০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে এবারের তাপমাত্রা। পুড়ে কয়লা হয়ে যাচ্ছে মানুষ, পশু-পাখির প্রাণ।
এপ্রিল ও মে মাস সাধারণত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উষ্ণতম মাস। মৌসুমি বৃষ্টিপাতের আগে এই দু’মাসের তাপমাত্রা কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসে। কিন্তু এবারের তাপমাত্রা বৃদ্ধি যেন স্বস্তি নয়, নিয়ে এসেছে ভয়াবহ বিপর্যয়।

রেকর্ড তাপে পুড়ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনের হটস্পট থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। একই কাতারে মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া ও লাওসও। উচ্চ তাপমাত্রা বৃদ্ধি দিন দিন অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

থাইল্যান্ডের ইতিহাসে ১৫ এপ্রিল ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম দিন। তাপমাত্রা ছিল ৪৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতিবেশী দেশ লাওস মে মাসে টানা দুদিন ৪৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে শীর্ষে ছিল। অপরদিকে, ১ জুন ভিয়েতনামের ইতিহাসেও রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছিল ৪৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ভিয়েতনামের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণতম জুন দিনের রেকর্ড ভেঙেছে।

বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক জোট বলেছে, এটি দুইশ বছরের তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছে। ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের (ডব্লিউডব্লিউএ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে এমনটি জানিয়েছেন তারা। মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এমনটি ঘটছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস ডেটার সিএনএন বিশ্লেষণে জানা যায়, এপ্রিলের শুরু থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত তাপমাত্রা প্রতি একক দিনে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রায় পৌঁছেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছয়টি দেশেই এমনটি ঘটেছে।

এপ্রিল-মে তাপমাত্রা প্রবাহের ফলে হাসপাতালে ভর্তি হয় অনেক মানুষ। পরে স্কুল বন্ধ দিতেও বাধ্য হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। অধিক তাপমাত্রায় রাস্তার ক্ষয়ক্ষতিসহ আগুনও ছড়িয়ে পড়ে অনেক অঞ্চলে। অনেক মানুষ মারা গেলেও মৃতের সংখ্যা অজানাই রয়ে গেছে। তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে বায়ুমন্ডল উষ্ণ হয়ে ওঠে। ফলে আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি হয়ে যায়। তাই আর্দ্র তাপ তরঙ্গের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়।

তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আর্দ্র তাপ তরঙ্গও বেশি বেশি ঘটতে থাকে। জাতিসংঘের হিউম্যান ক্লাইমেট অনুমান করেছে, নির্গমন একই হারে বাড়তে থাকলে, পরবর্তী দুই দশকে তাপজনিত কারণে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

চরম তাপমাত্রার কশাঘাত সবচেয়ে বেশি আঘাত করে দরিদ্র ও দুর্বলদের। অসহনীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে রাস্তার বিক্রেতা, ড্রাইভার, কৃষক, শ্রমিক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ সব সাধারণ মানুষ বেশি ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হন। বিপজ্জনক এ তাপমাত্রার প্রবাহ তাদের স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

অধিক তাপমাত্রা হিটস্ট্রোকের অন্যতম কারণ। উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাবে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা ও গর্ভবতী ব্যক্তিদের জন্য জীবন আরো হুমকির হতে পারে। তাপ তরঙ্গের তীব্রতা শুধু স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে না, পরিবেশ ও জীবিকাকেও হুমকির মুখে ফেলে দেয়। তাই তাপের তীব্রতা কমাতে সরকারি পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যক।

সরকারের কিছু পদক্ষেপ বিকাশ যেমন তাপের জন্য প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা, সবার জন্য সক্রিয় শীতলীকরল, নগর পরিকল্পনা ও তাপ পরিকল্পনার মতো পদক্ষেপগুলোর জন্য তাদের প্রতিবেদনে সুপারিশ করেছে ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের বিজ্ঞানীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com