উত্তরা সংবাদ দাতা:
রাজধানীর ব্যস্ততম বিমানবন্দর মহাসড়ক উত্তরা আজমপুর বিএনএস সেন্টার এলাকায় রাস্তার মাঝখানে দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পরে রয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন( অঞ্চল – ১) এর স্টিল স্ট্রাকচারাল ওয়্যারহাউজ।এর ফলে সড়কে বাড়ছে যানজট, জনদূর্ভোগ এবং ব্যাহত হচ্ছে বি আর টি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ ।
এহেন নানাবিধ অসুবিধার কারণে পথচারীরা এটিকে সড়কের বিষফোঁড়া হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ভুমিকম্প, অগ্নিকান্ড,জলোচ্ছ্বাস সহ দূর্যোগকালীন সময়ে ব্যবহারের জন্য রোডস্ এন্ড হাইওয়ের অনুমিত নিয়ে এই ওয়্যার হাউজটি স্থাপন করেন,ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অঞ্চল -১।
উড়াল সড়কে উঠা নামার সংযোগস্থল রোডস এন্ড হাইওয়ের মহাসড়কের মাঝখানে এ ধরণের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গড়ে উঠা ওয়্যারহাউজের কারণে এখানকার পথচারীদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দূর্যোগকালীন সময়ে ব্যবহারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি রাখার নামধারী ওয়্যার হাউজটি বর্তমানে চিনতাইকারীর আখরা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অঞ্চল -১ এর এই স্টিলের তৈরি ওয়্যারহাউজটির কারণে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে নির্ভীগ্নে গাড়ি চলাচল, বাড়ছে যানজট ও জনদূর্ভোগ।
এ বিষয়ে বি আর টি প্রকল্প এয়ারপোর্ট জোনের প্রকল্প পরিচালক মোঃ ইলিয়াস শাহ জানান, সিটিকর্পোরেশনের সাথে তারা এ বিষয়টি সম্মন্বয় করেছেন, খুব শীগ্রই তারা রাস্তার উপর নির্মিত এই ওয়্যারহাউজটি সরিয়ে নিবেন।
তিনি আরো বলেন, এই ওয়্যারহাউজ স্ট্রাকচারটি সরিয়ে নেওয়ার বিকল্প জায়গার ও ব্যবস্থা হয়েছে।কতো দিনের মধ্যে এটি সড়ানো হবে জানতে চাইলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অাঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরিন বলেন, দূর্যোগকালীন সময়ের জন্য বিএনএস সেন্টারের সামনের ওয়্যারহাউজে রাখা প্রয়োজনীয় মালামাল গুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।তিনি আরো বলেন,এ বিষয়ে বি আর টি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সাথে তাদের কথা হয়েছে, এ প্রকল্পের কাজের সুবিধার্থে যে কোন সময় এই স্টিল স্ট্রাকচারের ওয়্যারহাউজটি তারা সরিয়ে নিবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, টঙ্গী ফায়ারসার্ভিস স্টেশন উড়ালসড়ক হয়ে ঢাকাগামী পরিবহন গুলো উত্তরায় বিএন এস, সেন্টারের সামনে নেমেই বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়াও প্রতিদিন উত্তরবঙ্গের শতশত গণপরিবহন ও ব্যাক্তিগত পরিবহন গাজীপুর, টঙ্গী ফায়ারসার্ভিস স্টেশন হয়ে উত্তরা আজমপুর উড়ালসড়কে চলাচল করা গাড়ি গুলোকে এ এলাকায় উড়ালসেতুতে উঠা নামার সময় যানজটে আটকে নানান বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। উত্তরা বিডিআর কাঁচাবাজারের সামনের মুল সড়কের মাঝখানে গড় উঠা ওয়্যারহাউজের আসে পাশে সড়ক দখল করে গড়ে উঠেছে হাস মুরগীর দোকান,কামারের দোকান, চা-দোকানসহ বিভিন্ন কাঁচা মালের দোকান ও ময়লার স্তুপ । এ সকল দোকান গুলোতে আড্ডা মারতে দেখা যায় অজ্ঞান পাটির সদস্য,গণপরিবহন থেকে যাত্রীদের মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়া চোর ও চিনতাইকারীদের। রাজধানী উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়কে যানজট ও দূর্ঘটনা নিরসনে ইতিমধ্যে সরকার বহুমুখি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
প্রকল্প গুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল ও উড়াল সেতু। রাজধানীর ব্যস্ততম বিমানবন্দর মহাসড়কে বি আরটি প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে।ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়ার মধ্যদিয়ে আর অল্প কিছু দিনের মধ্যে উত্তরা মডেল টাউনে বসবাসকারীদের মুখে হাসি ফুটবে এমনটা জানিয়েছেন উত্তরাবাসী।
সুত্রে জানা যায়, প্রায় ৪ বছর আগে দুর্যোগকালীন সময় ব্যবহারের প্রয়োজনীয় মালামাল রাখার জন্য মহাসড়কের মাঝখানে অপরিকল্পত ভাবে তৈরি করা এ ওয়্যার হাউজের বাইরে রক্ষিত মালামালের তালিকা টাঙানো থাকলেও মালামালের অস্তিস্ব নেই। দখলবাজ ও আসপাশের দোকানদারা নিজস্ব মালামাল রেখে গোডাউন বানিয়ে এটিকে ব্যবহার করে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।এখানকার পচাঁ গলা ময়লা ও প্রশ্রাবের দূর্গন্ধে পথচারীরা অসহায়। ওয়্যারহাউজ এলাকায় বহিরাগতের আনাগোনায় সেখানে সাধারণ পথচারীদের নিরাপত্তার জুঁকি দিন দিন বেড়েই চলছে। স্থানীয় পথচারীরা আরো জানান,মহাসড়ক থেকে ওয়্যার হাউজটি না সরালে এবং এ অবস্থা বেশি দিন চলতে থাকলে এলাকাটি নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। উত্তরার বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ উত্তরা আজমপুর (বি ডি আর) কাঁচা বাজারে আসে। বাজারে আসা ক্রেতারা ওয়্যার হাউজটিকে উত্তরাবাসীর পথের কাঁটা মনে করে এটিকে দ্রুত সরানোর দাবি জানান। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (অঞ্চল -১) এর নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) অতিরিক্ত দায়িত্ব মনোরঞ্জন শাহ বলেন,এই ওয়্যারহাউজটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে তারা সরিয়ে নিবে ।
এ বিষয়ে তারা আন্তরিকতার সহিত কাজ করছে। এ ছাড়াও এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, কনট্রাকটরের সহিত তারা কথা বলেছে, বি আর টি প্রকল্পের কাজে কোন ধরনের অসুবিধা না হয় সে দিকে খেয়াল রয়েছে তাদের।তারা যত দ্রুত সম্ভব এটিকে সরানোর ব্যবস্থা নিবেন