র্যাব পরিচয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ৪৮ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় মূলহোতাসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে একই অপরাধে একাধিক মামলা।
ডাকাত দলের সদস্যরা পবিত্র কোরআন ছুঁয়ে শপথ নিয়েছিলেন, কেউ কাউকে ধরিয়ে দেবে না বলে। এমনকি ডাকতির টাকায় পরিশোধ করা হয় এনজিওর কিস্তি ও আইনজীবীর ফিসহ ব্যক্তিগত ঋণ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিস্তার মেলেনি।
রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি জানান, ডাকাতিতে অংশ নেয়া সাতজনকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং ডাকাতির টাকায় কেনা স্বর্ণালঙ্কার।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মূলহোতা সাগর, আবু ইউসুফ, সবুজ মিয়া ও দিদার মুন্সীসহ আরো তিনজন।
ঢাকার ডিবি প্রধান আরো জানান, গত ১০ অক্টোবর বিকেলে খিলক্ষেত থানাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে সাদা রংয়ের একটি প্রাইভেটকারের গতিরোধ করে মেরুন রংয়ের আকেরটি প্রাইভেটকার। গাড়ি থেকে র্যাবের পোশাক পরা পাঁচ থেকে ছয়জন নেমে সাদা প্রাইভেটকারে থাকা দুজনকে হাতকড়া পরিয়ে, চোখ বেঁধে নিজেদের গাড়িতে তোলে। ব্যাংক থেকে তোলা ৪৮ লাখ টাকাসহ ঐ দুই ব্যক্তিকে প্রায় ২৫ মিনিট পর ৩০০ ফিটের বোয়ালিয়া ব্রিজে নামিয়ে তারা কাঞ্চন ব্রিজের দিকে চলে যান।
হারুন অর রশীদ জানান, দিনের বেলায় প্রকাশ্যে ফিল্মি কায়দায় এমন ডাকাতির ঘটনা তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, র্যাব পরিচয় দেওয়া ডাকাত চক্রটি ঘটনার দিন সকাল থেকেই রাজধানীর উত্তরার আল আরাফা ব্যাংক থেকেই ভুক্তভোগীদের অনুসরণ করছিল। টাকা তুলে বের হওয়ার পর ব্যাংকের ভেতরে থাকা ডাকাত দলের সদস্যরা বাইরে থাকা টিমকে জানিয়ে দেয়। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে খিলক্ষেত এলাকায় আসলে গতিরোধ করে আরেকটি টিম।
তিনি আরো জানান, ব্যাংক থেকে নগদ টাকা উত্তোলনকারীরাই চক্রটির মূল টার্গেট। ডাকাতির পরিকল্পনা হয় ৪ অক্টোবর। তারা পরস্পর কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করেছিলেন, কেউ কাউকে ধরিয়ে দেবেন না। কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হলো না।