ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ খাদ্য সংকট সৃষ্টি করে সেখানকার শিশুদের তিলে তিলে গণহারে হত্যা করা হচ্ছে। মূলত ইসরায়েল গাজায় খাদ্যসহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় অঞ্চলটিতে শিশুদের গণহত্যার শিকার হতে দেখছে আন্তর্জাতিক সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেন।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেভ দ্য চিলড্রেনের হিউম্যানিটারিয়ান পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি বিভাগের প্রধান আলেজান্দ্রা সাইহ এই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘গাজায় আমরা এখন যা দেখছি তা হলো, তিলে তিলে গণহত্যার শিকার হচ্ছে শিশুরা।’
আলেজান্দ্রা সাইহ আরো বলেছেন, ‘প্রায় কোনো খাবারই আর অবশিষ্ট নেই সেখানে (গাজা) এবং তাদের (শিশু) কাছে কিছুই পৌঁছাচ্ছে না। শিশুরা ক্ষুধার্ত হয়ে বসে আছে খাবারের আশায় আর তখন ত্রাণের খাবারবাহী ট্রাক আক্ষরিক অর্থে কয়েক মাইল দূরে নিশ্চল বসে আছে, কিন্তু প্রবেশ করতে পারছে না। আমরা জানি, এটি মূলত ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ ও বিধিনিষেধের কারণেই ঘটছে।’
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলছে চার মাস ২২ দিনেরও বেশি সময় ধরে। এই ১৪৫ দিনে অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে ৩০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। সেই বিবেচনায় অঞ্চলটিতে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ২০৬ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনিদের রমজানের প্রথম দিনে জেরুসালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ অভিমুখে পদযাত্রার আহ্বান জানিয়েছেন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া। মূলত আগামী রমজানে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের জন্য আল-আকসায় নামাজ পড়া নিষিদ্ধ করতে পারে ইসরায়েল—এমন আশঙ্কা থেকে এবং গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিপরীতে আরো বেশি সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যেই এই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
জেরুসালেমের আল-আকসা মসজিদ বিশ্বের পবিত্র স্থানগুলোর একটি। মুসলিম, খ্রিষ্টান ও ইহুদি—তিন ধর্মের মানুষের কাছেই এই জায়গা পবিত্র বলে বিবেচিত। বিগত কয়েক হাজার বছর ধরেই এই জায়গা ঘিরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে। তিন ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে এই পবিত্র জায়গাকে ঘিরে সংঘাত আরো উসকে ওঠে।
এদিকে গাজা যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েল হুমকি দিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে আল-আকসা মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধ করে দিতে পারে। ইসরায়েলের এই ঘোষণার পরপরই ফিলিস্তিনিরা প্রতিবাদ করেছেন। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের রাজনৈতিক দলগুলোও এই উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে।
ইসরায়েলের এ ধরনের উদ্যোগের প্রতিবাদে ইসমাইল হানিয়া আল-আকসা অভিমুখে পদযাত্রা করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘জেরুসালেম ও পশ্চিম তীরে আমাদের লোকজনকে রোজার প্রথম দিনে আল-আকসা অভিমুখে পদযাত্রার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সূত্র: তেহরান টাইমস