টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) এলাকায় ছাত্রীদের একটি মেসে ভিডিও ধারণের অভিযোগে যথাযথ বিচার না পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানায় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকাল ১১টায় শিক্ষার্থীরা মুক্তমঞ্চে অবস্থান নেন।
ছাত্রীদের অভিযোগ, স্থানীয় সরকার বাড়ির মেস মালিকের ছেলে কৌশলে ভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে বাথরুমের ভেতর মোবাইল ক্যামেরা স্থাপন করেন। এক পর্যায়ে তা দেখে ফেলেন চতুর্থ বর্ষের সোনিয়া (ছদ্মনাম) নামের এক ছাত্রী। ক্যামেরা দেখে তিনি চিৎকার করেন। এ সময় মেসের অন্য মেয়েদের নিয়ে ‘ক্যামেরা আসলো কীভাবে’ তা দেখতে ছাদে যান। সেখানে দেখা যায়ন, ঐ মেস মালিকের ছেলে তুহিন সরকারকে। এতে ছাত্রীরা দিশেহারা ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। দ্রুত নিজ বিভাগের চেয়ারম্যানকে ঘটনাটি জানান তারা। চেয়ারম্যান বিষয়টি প্রক্টরিয়াল বডিকে জানাতে বলেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডিকে লিখিত অভিযোগ দেন ঐ ছাত্রী।
গত ৮ মে প্রক্টর অফিসে দেওয়া অভিযোগ পত্রে তিনি জানান, আমি ঘোষপাড়ার হানিম সরকারের ছাত্রী মেসের পঞ্চম তলায় ছিলাম, গত ৭ মে (মঙ্গলবার) তারিখে জরুরি প্রয়োজনে মেসে আসার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গোসলে ঢুকি। গোসলরত অবস্থায় বাথরুমের জানালায় আমি লাঠিজাতীয় কিছুর সেঙ্গে একটি ফোনের ক্যামেরার দিকটা বাধা অবস্থায় দেখতে পাই। তৎক্ষণাৎ আমি মেসে যারা ছিলেন, তাদের সবাইকে একসাথে চিৎকার করে ডেকে খুঁজে দেখতে বলি যে ছাদে কেউ আছে কিনা। যখন সবাই ছাদে গিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে, তখন তারা উপলব্ধি করে কেউ লুকানোর চেষ্টা করছে, সিঁড়িঘরে ট্যাংকের পিছনে। যখন সবাই বুঝতে পারে এবং তাকে বের হয়ে আসতে বলে তখন সে কোনো শব্দ ছাড়া শুয়ে পড়ে। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর সেখান থেকে বাড়িওয়ালার ছেলে তুহিন সরকার বের হয়ে আসে এবং পুরো বিষয়টিকে অস্বীকার করে। এ সময় তার পরিবারকে জানানো হলেও তারা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। তারা চলে যাওয়ার পর পুনরায় খোঁজাখুজি করলে অনুরূপ একটি লাঠি দড়ি বাঁধাসহ ট্যাংকের পাশে খুঁজে পাওয়া যায়। বর্তমানে মেসে অবস্থানরত মেয়েরা বিভ্রান্তকর পরিস্থিতিতে রয়েছে এই ভয়ে যে, এই লোক এই ধরনের ভিডিওগ্রাফি কতদিন যাবত করছে? কত মেয়ের অপ্রীতিকর ভিডিও এর আগে করা হয়েছে? এই মেসে অবস্থানরত মেয়েদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা কারে এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অনুরোধ জানান মেসে অবস্থানরত মেয়ে শিক্ষার্থীরা।
এই ঘটনা জানাজানির পর ক্যাম্পাসে সব শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ১৯ মে (রোববার) সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপর্যুক্ত শাস্তির দাবিতে ভিসি কার্যালয়ে অবস্থান নেন। তারপরেও সুষ্ঠু বিচার না পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার মুক্তমঞ্চে অবস্থান নেন।