সিটিজেননিউজ ডেস্কঃঅন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা ও হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়, গর্হিত কর্মকাণ্ড, এসব দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপপ্রয়াস। যারা দেশে দুর্বৃত্তপনা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ইস্কাটনের বিয়াম ফাউন্ডেশনের কনফারেন্সরুমে সাম্প্রতিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ বিষয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
খালিদ হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নানাভাবে আক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তাদের মন্দির, উপাসনালয়, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে এক শ্রেণির দুর্বৃত্ত লুট ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে সরকারকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। আবার এ সংক্রান্ত কিছু গুজব প্রচারের মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য নষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বিগত এক মাস যাবত অনেক মাদরাসা শিক্ষার্থীসহ ছাত্র-জনতা রাত জেগে সংখ্যালঘুদের উপাসনালয় ও বাড়িঘর পাহারায় নিয়োজিত রয়েছেন। আমরা আশা করি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তারা এভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় পাশে থাকবেন।
ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, দেশের জনগণ বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জানমাল, ধর্মীয় উপাসনালয়ের নিরাপত্তা বিধানে বর্তমান সরকার সচেষ্ট ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যারা দুর্বৃত্তপনা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করবো, সব ধর্মীয় পক্ষ সহিষ্ণুতার পরিচয় দেবে। বাংলাদেশ জাতিগত ও ধর্মীয়ভাবে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের দেশ। এটি আমাদের সবসময় ধরে রাখতে হবে। এর অন্যথা হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ সময় তিনি এ সাম্প্রদায়িক হামলার পেছনে কোনো বিশেষ পক্ষ সক্রিয় রয়েছে কিনা সেটি খুঁজে দেখতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
আজ রোববার (১১ আগস্ট) তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেবেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য কাজ করবেন।
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর কী ধরনের কর্মপরিকল্পনা রয়েছে জানতে চাইলে ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, প্রথমে আমরা গুরুত্ব দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করবো। এটা আমাদের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এরপর যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চাচ্ছে তাদের আইনের আওতায় আনবো। সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার উপাসনালয় ও বাড়িঘর পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আগামীতে যাতে কোনো সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা না ঘটে সেজন্য একটি হটলাইন চালু করবো।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সাম্প্রদায়িক হামলার বিষয়ে গুজব প্রতিরোধে তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করবো।
হজের খরচ কমানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন হজের খরচ এত বেশি সেটা দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি দেখবো। অনেকে বলেন এর পেছনে সিন্ডিকেট রয়েছে। যদি সিন্ডিকেট থেকে থাকে সেটি আমরা ভাঙবো। একটি ধর্মীয় ইবাদতকে আমরা ব্যবসায় পরিণত করতে দেব না।