ক্রীড়া প্রতিবেদকঃক্ষমতার পালাবদলের পর দেশ জুড়ে চলছে অস্থিরতা। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও চলছে ব্যাপক রদবদল। এমন পরিস্থিতির আঁচ ক্রীড়াঙ্গনেও লাগার আভাস দেখা যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড স্বায়ত্তশাসিত হওয়ায় নতুন সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
সদ্য দায়িত্ব প্রাপ্ত যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা প্রথম দিন কার্যালয়ে গিয়ে বিসিবির বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি জানান বিসিবিকে তারা কেবল পরামর্শ দিতে পারেন, বিসিবির বিষয়ে, যেহেতু বিসিবি একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সিদ্ধান্তটা আমরা দিতে পারবো না। বিসিবি থেকে পরামর্শ নিতে পারবো, তাদেরকে পরামর্শ দিতে পারবো।
বলার অপেক্ষা রাখে না, শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালানো এবং তার সরকারের পতনের পর থেকে বিসিবিতে সরাসরি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও আওয়ামী লীগের সাংসদ নাজমুল হাসান পাপন বোর্ডে আসছেন না। শোনা যাচ্ছে, তিনি দেশের বাইরে চলে গেছেন।
কাজেই বিসিবির কাজ পরিচালনার জন্য তার জায়গায় একজন সভাপতি নিয়োগও জরুরি হয়ে পড়েছে। সেক্ষেত্রে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পরিবর্তে অন্তবর্তীকালীন সময়ে একজন বোর্ড প্রধান নিয়োগের সম্ভাবনা প্রচুর। তিনি কী বিসিবির অবশিষ্ট পরিচালকদের মধ্য থেকে একজন হবেন? নাকি অন্তবর্তীকালিন সরকার মনোনীত কেউ হবেন?
তা নির্ভর করছে আইসিসির নিয়ম ও নীতি অনুযায়ী। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন অনুপস্থিত,তার পরিবর্তে নতুন সভাপতি নিয়োগ জরুরি, আইসিসি এই মর্মে নতুন সভাপতি নিয়োগের সবুজ সঙ্কেত দিলে অন্তবর্তীকালীন সময়ে একজন নতুন সভাপতি দেখা যেতে পারে।
তবে তিনি বর্তমান বোর্ড পরিচালকদের মধ্য থেকে হবেন, নাকি বোর্ডের বাইরে থেকে কাউকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হবে- সেটা নির্ভর করবে আইসিসির প্রেসক্রিপশন বা গাইড লাইনের ওপর।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘যেহেতু বিসিবি কেটি শায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। বিসিবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আমরা দিতে পারবো। আমরা শুধু কিছু সাজেশন দিতে পারবো বা নিতে পারবো। বিসিবির সভাপতি অনুপস্থিত আছেন। অবশ্যই একটি ফেডারেশনের কাজ চালাতে হলে তার সবগুলো অর্গান ঠিকভাবে চালাতে হয়। সভাপতির মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যিনি আছেন, তিনি আছেন অনুপস্থিত। কিন্তু বিসিবির মত একটি অটোনোমাস ফেডারেশন আইসিসির অধীনে। এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না।’
‘আমরা সাজেস্ট করেছি, যারা বিসিবির পরিচালক আছেন, তারা এ বিষয়ে কিভাবে আইসিসির লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্কের মধ্য থেকে কিভাবে এ বিষয়টি সমাধান করা যায় এবং অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য কাউকে নিয়োগ করা যায় কি না, এ বিষয়ে তারা আমাদেরকে পরবর্তীতে রিপোর্ট করবে এবং আমরা প্রক্রিয়াটা চালু রাখবো।’
এদিকে ওপরের অংশ পড়ে ভাববেন না বিসিবির সব সমস্যা চুকে গেছে। ক্রীড়া উপদেষ্টা যখন এমন ঘোষণা দিলেন, ঠিক তখন মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শোনা গেল ভিন্ন আওয়াজ। বিসিবিতে এক যুগের বেশি সময় ধরে অবহেলিত ও অবমূল্যায়িত ক্রিকেট সংগঠকরা এক হয়ে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান পরিচালক পর্ষদের অপসারনের দাবিতে সোচ্চার।
জানা গেছে, আজ রোববার দুপুরেই আনুষ্ঠানিকভাবে বর্তমান বোর্ড পরিচালক পর্ষদ ভেঙ্গে অন্তবর্তীকালিন বোর্ডের দাবি তুলবে মূলত বিএনপি সমর্থক ক্রিকেট সংগঠকরা এবং তারা দলবেধে শেরে বাংলায় গিয়ে বোর্ড কর্তাদের অপসারন তথা বিসিবির বর্তমান পরিচালক পর্ষদ ভেঙ্গে দেয়ার দাবি তুলবেন।