মাসুদ পারভেজ (উত্তরা): রাজধানীর দক্ষিণখান ও উত্তরখানের রাস্তার উন্নয়নের কাজ অতিদ্রুত শেষ করে যাতায়াতের উপযোগী করার দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।
শুক্রবার সকালে দক্ষিণখান বাজার এলাকায় এলকে প্লাজার সামনে হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন ভেনার ফেস্টুন হাতে নিয়ে রাস্তায় মানববন্ধন করেন। এসময় এলাকার সর্বস্তরের জনগণ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে এবং সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি দাওয়া জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন যাবত এলাকার লাখ লাখ মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছে। মেঘা প্রকল্পের কাজে ভোগান্তির শিকার হয়ে এখানকার জনজীবন অচল হয়ে পরেছে। দ্রত সড়ক উন্নয়ন করে নাগরিক জীবনে ভোগান্তি কমাতে আজ সকালে এলাকার নাগরিক সমাজ, শিক্ষক সমাজ, স্থানীয় বাড়ির মালিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক সমাজসহ আপামর জনগণ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও ছোট ছোট শিশু বাচ্চারাও হাতে বিভিন্ন প্লেকার্ড নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। তাদের হাতে থাকা প্লেকার্ডে লেখা রয়েছে, ভোগান্তি কবে শেষ হবে,দ্রুত কাজ শেষ করতে হবে,আর কতো ভোগান্তি, এ ভোগান্তি কবে শেষ হবে এমন অনেক লেখা।
একনেক প্রকল্পের ৪ হাজার ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দে নতুন১৮টি ওয়ার্ডকে মেইন স্টিমিংয়ের সাথে সংযুক্ত করার গুরুত্বপূর্ণ এই কাজটি ২৪ বিগ্রেড বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে ।
বক্তৃতা বলেন,সড়ক উন্নয়ন কাজ ধীর গতির কারণে উত্তরখান-দক্ষিণখান এলাকায় বসবাসরত লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা অচল ও সুয়ারেজ লাইন বন্ধ থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই এখানকার পাড়া মহল্লার সড়কে হাটুপানি জমে যায়। গত দুই বছর ধরে সুয়ারেজ লাইন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে উত্তরখান ও দক্ষিণখান এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি এখানকার অনেক বাসা বাড়িতে বৃষ্টির পানি ঢুকে গিয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পরে। বিশেষ করে টিন শেড বাড়ি গুলোতে পানি ঢুকে একাকার হয়ে আছে। বাসিন্দারা না পারতেছে রানতে, না পারতেছে খাইতে। অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা।
সরেজমিনে আরো দেখা যায়, মাসের পর মাস কসাইবাড়ী-কাঁচকুড়া সড়ক,আজমপুর-মাজার চৌরাস্তা সড়ক,বিমানবন্দর রেলস্টেশন-আসকোনা সড়কে এলোপাতাড়ি ভাবে ড্রেনের পাইপ, ইটা বালু ও মাটির স্তুপ পড়ে আছে।
সড়কে পরে থাকা এসব ইটা বালু, সিমেন্টের পাইপ, মাটির স্তুপ,বড় বড় গর্ত ও বিভিন্ন মালামাল পরে থাকার কারণে পথচারী চলাচলে চরম অসুবিধা হচ্ছে।
এছাড়াও দীর্ঘদিন সড়ক উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকায় এখানকার সড়কে সুয়ারেজ লাইন গুলো ময়লা আবর্জনায় বন্ধ হয়ে আছে।
স্থানীয়রা জানান, কসাইবাড়ী হয়ে দক্ষিণখান বাজার কাঁচকুড়া সড়কের উন্নয়ন কাজ ৪ মাস বন্ধ থাকার পর পূণরায় কাজ শুরু হয়েছে। কাজের ধীর গতির কারণে এখনো ভোগান্তিতে রয়েছে লাখ লাখ মানুষ।
দক্ষিণখান আইনুসবাগ, প্রেম বাগান, নগইরা বাড়ী, চালাবন, মাঝি বাড়ী ও আনোয়ার বাগ এলাকায় রয়েছে হাঁটু সমান পানি।
পুলিশ পাড়ি রোড ও আটিপাড়া অরুন তাজ ভিলার সামনে এখনো পানি থৈথৈ করছে।
আর্মি সোসাইটি এলাকার বেশির ভাগ বাড়ির নিচ তলাতে পানি ঢুকে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায়
বয়স্ক নারী পুরুষ ও অসুস্থ রোগীদের নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছে এখানকার সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়,মেঘা প্রকল্পের বেশির ভাগ অংশে পয়োনিষ্কাশন ড্রেন ও ফিড তৈরি করা হলেও অদৃশ্য কারণে গত ৪ মাস যাবত কাজ বন্ধ থেকে আবারও স্বল্পপরিসরে চালু হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, অপরিকল্পিত খুঁড়াখুঁড়ি ও কাজের ধীর গতির কারণে কয়েক বছর যাবত এখানকার মানুষ বন্দি জীবন কাটাচ্ছে।
এসময় স্থানীয় বাড়ী মালিক খলিল মিয়া ইনকিলাবকে বলেন, কয়েক বছর যাবত তারা এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে পারে না। কয়েক বছর যাবত অসুস্থ রূগিদের নিয়ে তারা বিপাকে আছে। ডাক্তারের কাছে যাবো, কোন রাস্তায় যাবো রাস্তা খুজে পাই না, যে দিকে যাই- সেই দিকেই সড়কের বেহাল দশা, পানি আর পানি।
তিনি আরো বলেন,বৃষ্টির কারণে উত্তরখান ও দক্ষিণখানের পাড়া মহল্লায় সব রাস্তায় কম বেশি পানি জমে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে উঠেছে,ঠিকভাবে হাঁটা ও যায় না, অনেক কষ্ট করেই উত্তরা যেতে হয়। এসময় আজমপুর কাঁচাবাজার, দক্ষিণখান কাঁচা বাজার, মোল্লারটেক কাঁচা বাজার, আসকোনা কাঁচা বাজারের শত শত দোকানদার ও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলো। সাথে কথা হলে তারা বলেন, এখানকার বেশির ভাগ রাস্তা কাটা কাটির কারণে মানুষ চলাচল করতে পারে না। আগের মতো কাস্টমার বাজারে আসেনা,বেচা-কেনা কম হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে তারা খুব কষ্টে দিন যাপন করছেন তারা।