নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘মিডনাইট সরকারের মিডনাইট তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ গতকাল বলেছেন, বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের নামে অতীতের মতো কোনো বিশৃঙ্খলা বা ভাঙচুর সহ্য করা হবে না। জনগণ ও রাষ্ট্রের যেকোনো ক্ষতিসাধনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এমন মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, তার (তথ্যমন্ত্রী) উদ্দেশে আমি বলতে চাই- আপনি যে বিশৃঙ্খলার কথা বলছেন, সেটিই তো উসকানিমূলক, একটা অশুভ উদ্দেশ্য নিয়েই এ ধরনের বক্তব্য রাখছেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ না থাকলে তো কোনো সমাবেশই হবে না, নিজেদের আয়োজনে নিজেরাই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করব এই কথা কি কেউ বিশ্বাস করবে? এসব কথা বলে পরিবেশ তিক্ত করছেন তথ্যমন্ত্রী নিজেই। পুলিশি তাণ্ডব, মাস্তানদের তাণ্ডবের মাধ্যমে বিরোধী দলের সভা পণ্ড করার ইতিহাস-ঐতিহ্য আপনাদেরই। আমাদের সব কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল, আছে এবং থাকবে। কোনো উসকানিমূলক কথা বলে আমাদের নিবৃত্ত করতে পারবেন না।
বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে দলের প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে রিজভী বলেন, দেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রাণপ্রিয় নেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ১৮ জুলাই বরিশাল, ২০ জুলাই চট্টগ্রাম ও ২৫ জুলাই খুলনায় মহাসমাবেশ কর্মসূচি সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। জেলা-উপজেলায় প্রস্তুতিসভা হচ্ছে। এই শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশগুলোতে যোগ দিতে মানুষের আগ্রহের কোনো কমতি নেই। মহাসমাবেশ ঘিরে সাধারণ জনগণের অভাবনীয় সাড়া দেখে সরকারের চিত্তচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিতে গিয়ে রিজভী বলেন, আপনারা লক্ষ্য করছেন, দেশে আইনশৃঙ্খলার কী ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। গতকাল কুমিল্লা আদালতে বিচারকের খাস কামরায় নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা, পুলিশ, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের সামনে একজন আসামি আরেকজন আসামিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। দেশে কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হলে একজন বিচারক এজলাসে তার নিজের নিরাপত্তা নিয়ে এমন আতঙ্কবোধ করছেন। আর সন্ত্রাসের নিরবচ্ছিন্নতা ও প্রসারে দেশজুড়ে জনগণের মধ্যে নীরব আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, এই রাষ্ট্র কার্যত অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। এখন পরিস্থিতি দেখে মনে হয় দেশে কোনো সরকারই নেই। তাই আমি এই ব্যর্থ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাব- ক্ষমতা জোর করে বেশি দিন ধরে রাখা যায় না, জোর-জবরদস্তির পরিণতি বড় করুণ এবং ভয়ঙ্কর, তাই ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।
রিজভী আরও বলেন, দেশের শেয়ারবাজার আবারও দৈন্য-দশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা মানে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, লুটপাটের মহোৎসব। আওয়ামী সরকার আর শেয়ারবাজার একসঙ্গে চলতে পারে না। দেশের অর্থনীতি দুর্নীতির বেড়াজাল দিয়ে ঘেরা বলেই বারবার শেয়ারবাজারে ধস নামছে।