জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত হত্যাকাণ্ডে তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতার করা নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। মামলার সাক্ষী মিন্নিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে গ্রেফতারের পেছনে প্রভাবশালী কারও প্ররোচনা রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন এক এমপি। এছাড়া কুমিল্লার জজ আদালতে এক আসামির ছুরিকাঘাতে আরেক আসামি নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কমিটি।
বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মো. আফছারুল আমীন, মো. হাবিবর রহমান, সামছুল আলম দুদু, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পীর ফজলুর রহমান এবং সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকে মিন্নির বিষয়টি কমিটির সদস্য জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান তোলেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঘটনার তদন্ত শেষ না হলে এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না।
প্রসঙ্গত, এর আগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরসহ মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনার পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ ও পুলিশের কৌশলী এবং বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আটকে যান মিন্নি। বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ। এরপরই মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ২৬ জুন বরগুনা শহরে রিফাতকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার সময় স্বামীকে বাঁচাতে মিন্নির চেষ্টার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে পীর ফজলুর সাংবাদিকদের বলেন, বরগুনার ওই হত্যাকাণ্ড একটি আলোচিত ঘটনা। কিন্তু হঠাৎ করে মিন্নিকে গ্রেফতার করায় বিভিন্ন আলোচনা হচ্ছে। আমি বৈঠকে বলেছি, মিন্নিকে কারও প্ররোচনায় গ্রেফতার করা হয়েছে কি না, সেই আলোচনাও বিভিন্ন মহলে উঠেছে। এ বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য জানতে চেয়েছি আমি। তবে পুলিশ কোনো উত্তর দেয়নি।
তিনি আরো বলেন, আমার বক্তব্য শুনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বিষয়টি তদন্ত পর্যায়ে আছে। এ নিয়ে উপসংহার টানার সময় এখনও আসেনি।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী টুকু বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ঘটনার ‘বেটার’ তদন্ত চলছে। দোষী যেই হোক তাকে আইনের মুখোমুখি আনা হবে।
জানা যায়, বৈঠকে কুমিল্লার জজ আদালতে এক আসামির ছুরিকাঘাতে আরেক আসামি নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। কমিটি বলেছে, আদালত প্রাঙ্গণে হত্যা আর অন্য স্থানে এ ধরনের ঘটনা এক করে দেখার সুযোগ নেই। কার দোষে এ ঘটনা ঘটল, তা অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু বলেন, আমরা বিষয়টা খুব সিরিয়াসলি নিয়েছি। গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। দেখতে হবে কার দুর্বলতা আছে। আদালত প্রাঙ্গণে এ ধরনের ঘটনা আর অন্য কোথাও হত্যার ঘটনা এক নয়। জাতির জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তদন্ত কমিটি হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত করতে বলেছি।