আস্তর্জাতিক ডেস্ক: আমেরিকা দক্ষিণ সুদানের সব নাগরিকের মার্কিন ভিসা বাতিল করেছে ও নতুন ভিসা প্রদান স্থগিত করেছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ ঘোষণা দিয়েছেন। রবিবার (৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়া নিউজ।
রুবিও স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ‘দক্ষিণ সুদানের সব পাসপোর্টধারীর ভিসা বাতিল করার ও প্রবেশ রোধে ভিসা ইস্যু রোধ করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।
অভিবাসনবিরোধী প্ল্যাটফরমে প্রচারণা চালিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে এটিই ছিল প্রথম কোনো নির্দিষ্ট দেশের সব পাসপোর্টধারীর আলাদা করে রাখার পদক্ষেপ।
বিশ্বের নবীনতম ও দরিদ্রতম দেশগুলোর অন্যতম দক্ষিণ সুদান বর্তমানে রাজনৈতিক উত্তেজনার শিকার। রুবিও দক্ষিণ সুদানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সুযোগ নেওয়ার’ অভিযোগ করে বলেন, যখন কোনো দেশ কাউকে তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে চায়, তখন প্রত্যেক দেশকে অবশ্যই তাদের নাগরিকদের যথাসময়ে গ্রহণ করতে হবে।
রুবিও আরো বলেন, ‘দক্ষিণ সুদান পূর্ণ সহযোগিতা করলে, ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপগুলো পর্যালোচনা করতে প্রস্তুত থাকবে।
এএফপি বলছে, এই পদক্ষেপ এমন এক সময় এলো, যখন পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে গৃহযুদ্ধের মতো করে দক্ষিণ সুদান পুনরায় গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পরতে পারে। ওই যুদ্ধে চার লাখ মানুষ নিহত হয়।
ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেনের প্রশাসন দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের ‘টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস (টিপিএস)’ প্রদান করে, যার মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩ মে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
প্রতিবেদন অনুসারে, যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্যান্য অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির কারণে নিরাপদে দেশে ফিরতে না পারা বিদেশি নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র টিপিএস প্রদান করে, যা মানুষকে নির্বাসন থেকে রক্ষা করে।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানায়, টিপিএস প্রগ্রামের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ সুদানের নাগরিক ছিলেন প্রায় ১৩৩ জন ও আরো ১৪০ জন আবেদন করার যোগ্য ছিলেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন টিপিএস মর্যাদা বাতিল করতে শুরু করেছে। জানুয়ারিতে ভেনিজুয়েলার ৬ লক্ষাধিক নাগরিকের সুরক্ষা প্রত্যাহার করা হয়।
ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশগুলোর সঙ্গে তাদের নাগরিকদের প্রত্যাবাসন নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছে। দক্ষিণ সুদান থেকে আফ্রিকানদের ক্রমবর্ধমানসংখ্যক লোকের প্রবেশের চেষ্টার পর ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ সুদানকে আলাদা করে রাখার সিদ্ধান্ত নিল।
এসব অভিবাসী ইউরোপে ঝুঁকিপূর্ণ পথের বিকল্প হিসেবে দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করছে।