নিজস্ব প্রতিবেদক: বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, ন্যায়বিচার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে ২০টি মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের জোট হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)।
শনিবার (১২ অক্টোবর) প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের আহ্বায়ক এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা, ফোরামের সদস্য ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী প্রধান জাকির হোসেন, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক সামসুল হুদা, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সালেহ আহমেদসহ ফোরামের অন্যান্য সদস্যরা।
বক্তরা বলেন, আবরার হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে অসহিষ্ণুতা আর ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাহীনতার বহিঃপ্রকাশ। সর্বোপরি সমাজের সর্বস্তরে দায়হীনতা এবং জবাবদিহিতা ও আইনের শাসনের অভাবের কারণে আজ আমরা এমন ভয়াবহ সামাজিক ও রাজনৈতিক মূল্যবোধ বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।
তারা বলেন, এ পরিস্থিতি কাটিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা, মেধা আর মননের বিকাশ নিশ্চিত করতে এবং দুর্বৃত্তায়নের পরিবর্তে সুষ্ঠু রাজনৈতিক চর্চার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক অঙ্গীকার আর কঠোর দিকনির্দেশনা অত্যন্ত জরুরি।
মানববন্ধন শেষে ফোরামের পক্ষ থেকে বেশকিছু দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো-
১. দ্রুততার সাথে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার নিশ্চিত করা;
২. এ ঘটনা প্রতিরোধে, ঘটনা ঘটাকালে কিংবা ঘটনা পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা খতিয়ে দেখা;
৩. সর্বক্ষেত্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতা আর মুক্তচিন্তা চর্চার পরিবেশ নিশ্চিত করা;
৪. পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ করে হলগুলোতে শিক্ষার্থী নির্যাতনের যে অভিযোগ উঠছে তা ক্ষতিয়ে দেখতে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা, এসব টর্চার সেলগুলো কার্যকরভাবে বন্ধ করা এবং এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা খতিয়ে দেখে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা;
৫. দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি হলে র্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন প্রতিরোধে স্থায়ী কমিটি গঠন করা;
৬. কলুষিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংস্কার সাধন করা;
৭. ছাত্র রাজনীতির নামে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বার্থে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করার চলমান চর্চার অবসান ঘটানো;
৮. শিক্ষার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত, ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের বিকাশ এবং দেশ ও জাতির উন্নয়নের জন্য সুষ্ঠু ছাত্র রাজনীতির ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।