নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে গোলাগুলির বিষয়টিকে ভুল বোঝাবুঝি ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, বিজিবির তথ্যমতে পতাকা বৈঠকের অপেক্ষা না করে তারা (বিএসএফ) আটক জেলেকে ছেড়ে দেয়ার জন্য জোরাজুরি করছিল। আর তখনই উভয় পক্ষে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে একজন বিএসএফ সদস্য মারা যান। বিজিবি মহাপরিচালক ও বিএসএফের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। আমরা মনে করি, এটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, ‘এক্সিডেন্ট’ হয়েছে। আলাপের মাধ্যমে এর একটা সুরাহা হবে।
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন- আমাদের মাছ ধরার জন্য ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বিজিবি ও মৎস্য অধিদফতর যৌথ টহল দিচ্ছিল, সেই সময় তারা দেখে একটা নৌকায় করে কিছুসংখ্যক জেলে মাছ ধরছে। তাদের চ্যালেঞ্জ করলে জানা যায়, তারা ভারতীয় জেলে। তাদের যখন আটক করা হয় তখন তাদের কয়েকজন বিএসএফকে খবর দিলে বিএসএফ সেখানে চলে আসে। সেখানেই ভুল বোঝাবুঝি হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে চমৎকার একটা সম্পর্ক রয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আমরা সবাই মর্মাহত হয়েছি।
এর আগে দু’জন র্যাব সদস্যকে বিএসএফের ধরে নিয়ে যাওয়া এবং পরে চোখ বাঁধা অবস্থায় ফেরত দেয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেখানে র্যাব টহল দিতে গিয়ে ভুলে ভারতীয় সীমানায় ঢুকে গিয়েছিল। সে জন্যই এই ঘটনাটি ঘটেছে। বিএসএফ তাদের দু’জনকে চোখ বাঁধা এবং আহত অবস্থায় আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। সেটাও একটা মিটিংয়ের মাধ্যমে সুরাহা হবে।
এ সময় বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আবরার হত্যার ঘটনায় আমরা খুব শিগগির একটা নির্ভুল চার্জশিট দেব। যাতে বিচার বিভাগের কাছে কোনো প্রশ্ন না থাকে। একটা নির্ভুল চার্জশিট দেয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের ৫৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ‘শেখ রাসেল আমাদের আবেগ আমাদের ভালোবাসা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তের ধমনি যেখানে বইছে, সেখানেই সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও টিউলিপ সিদ্দিকী আজ সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ উন্নতির শিখরে পৌঁছাত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের নাম উন্মোচনে শিগগির উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন গঠন করা হবে। যাতে তরুণ প্রজন্ম যুগ যুগ ধরে ইতিহাসের ষড়যন্ত্রকারীদের চিনতে পারে।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রশীদ আসকারী, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, শহীদ কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।