অনলাইন ডেস্ক: আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওসার, যুবলীগের প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুর রহমান মারুফ ও সংগঠনটির বহিষ্কৃত দফতর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমানসহ ২০ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সোমবার এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোতে হিসাব জব্দের জন্য পৃথক চিঠি পাঠিয়েছে। এনবিআর সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ব্যাংকগুলোতে পাঠানো নির্দেশনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওসার, তার স্ত্রী পারভীন লুনা, মেয়ে নুজহাত নাদিয়া নিলা ও তাদের প্রতিষ্ঠান ফাইন পাওয়ার সল্যুয়েশন লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন জব্দের কথা বলা হয়েছে।
যুবলীগের প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুর রহমান মারুফ, তার স্ত্রী সানজিদা রহমান ও তাদের দুটি প্রতিষ্ঠান টি-টোয়েন্টিফোর গেমিং কোম্পানি লিমিটেড ও টি-টোয়েন্টিফোর ল ফার্ম লিমিটেডের ব্যাংক হিসেব জব্দ করতে বলা হয়েছে।
অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে বলা হয়েছে, স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থসম্পাদক কে এম মাসুদুর রহমান, তার স্ত্রী লুতফুর নাহার লুনা, বাবা আবুল খায়ের খান, মা রাজিয়া খান এবং তাদের প্রতিষ্ঠান সেবা গ্রিন লাইন লিমিটেডের।
যুবলীগের দফতর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান, তার স্ত্রী সুমি রহমান ও তার প্রতিষ্ঠান মা ফিলিং স্টেশন, আরেফিন এন্টারপ্রাইজের হিসাব জব্দ করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া মোহাম্মদপুরের কাউন্সিলর পাগলা মিজান, তারেকুজ্জামান রাজিব ও তাদের পরিবারের হিসাবও জব্দ করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া যুবলীগের অব্যাহতি পাওয়া চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, স্ত্রী শেখ সুলতানা রেখা, ছেলে আবিদ চৌধুরী, মুক্তাদির আহমেদ চৌধুরী ও ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী এবং তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লেকভিউ প্রোপার্টিজ ও রাও কনস্ট্রাকশনের হিসেব থেকেও কোনো টাকা উত্তোলন বা স্থানান্তরে স্থাগিতাদেশ দেয়া হয়েছে।
ফলে এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কোনো টাকা উত্তোলন ও স্থানান্তর করতে পারবেন না।
সিআইসি থেকে এর আগে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, নুর নবী চৌধুরী শাওন এমপি, সেলিম প্রধান, জি কে শামীম, খালেদসহ বেশ কয়েকজন ও তাদের পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়।
আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ১১৬ ধারার ক্ষমতাবলে ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিতের আদেশ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, অনুসন্ধান শুরুর ১০ দিনের মাথায় সোমবার যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও ব্যবসায়ী জি কে শামীম, তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার এবং যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের মামলা করেছে দুদক।
মামলায় জি কে শামীম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার আয়বহির্ভূত ও অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া খালেদের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা হয়েছে।
উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে দুদকের ঢাকা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। পরে জি কে শামীম ও খালেদকে এ মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন দুদকের কর্মকর্তারা।
এ দুই আসামি র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন জেলে আছেন। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি দখল ও টেন্ডার দুর্নীতিতে জড়িতদের আরও এক ডজন নেতার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা প্রস্তুত হচ্ছে।
এ সপ্তাহেই একাধিক মামলা হতে পারে। সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও তার স্ত্রী ফারজানা চৌধুরী, চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরীর সম্পদেরও অনুসন্ধান করেছে দুদক টিম।