অনলাইন ডেস্ক: জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) ১৮তম শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে। আজারবাইজানের বাকুতে ১২০টি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের অংশগ্রহণে দুদিনের এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে শুরু হওয়া সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্য রাষ্ট্র নেতাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনস্থল বাকু কংগ্রেস সেন্টারে উপস্থিত হন। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানে চারদিনের সরকারি সফরে বৃহস্পতিবার রাতে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে পৌঁছান। ১২০টি উন্নয়নশীল দেশের ফোরাম ন্যামের দুদিনের সম্মেলন শেষ হবে আগামীকাল ২৬ অক্টোবর।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, আগামীকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন, প্রতিনিধিদলের প্রধানদের সঙ্গে ওয়ার্কিং লাঞ্চন ও সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন।
তিনি হিলটন বাকুতে একই সঙ্গে আজারবাইজানের দূত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দেয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ন্যাম সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আজারবাইজানে চারদিনের সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী রোববার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় বাকু হায়দার আলিয়েভ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন। বিমানটি ওইদিন সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
ন্যাম বিশ্বের ১২০টি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি ফোরাম, যা বড় কোনো পাওয়ার ব্লকের সঙ্গে বা বিপক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত নয়। জাতিসংঘের পর এটি বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রগুলোর বৃহত্তম গ্রুপিং।
ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু ও সাবেক যুগোশ্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট জোসেপ ব্রোজ টিটোর উদ্যোগে ১৯৫৫ সালে বান্দুং সম্মেলনে সম্মত নীতিমালা প্রণয়নের পর ১৯৬১ সালে যুগোশ্লাভিয়ার বেলগ্রেডে ন্যামটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
ভেনেজুয়েলার মারগারিটা দ্বীপে ২০১৬ সালে ১৭তম ন্যাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো হলেন চলতি ন্যাম সম্মেলনের চেয়ারপারসন।
এবারের ন্যাম সম্মেলনে অংশ নেয়া বিশ্ব নেতাদের মধ্যে রয়েছেন— ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ কানেল, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ, জিবুতির প্রেসিডেন্ট ইসমাইল ওমর, ঘানার প্রেসিডেন্ট নানা আকুফো-আদ্দো, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি, ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু, তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট গুর্বাঙ্গুলি বার্ডিমুহামেডো, বসনিয়া হার্জেগভিনার চেয়ারম্যান বাকির ইজেতগোভিচ, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি, লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ মুস্তাফা আল-সারাজ।
ন্যামের বর্তমান চেয়ারপারসন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণ দেন। তার ভাষণের পর আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আগামী তিন বছরের জন্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর বান্দুঙ্গ নীতির ভিত্তিতে ন্যামকে গড়ে তোলার অঙ্গীকারের কথা জানান ইলহাম।