নিজস্ব প্রতিবেদক:দ্রুত বার্ধক্যজনিত রোগ বা প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের শনাক্ত করতে ‘ফাইন্ড দ্য চিলড্রেন-১০ ইন বাংলাদেশ উইথ প্রোজেরিয়া’ নামে ক্যাম্পেইন চালু করেছে দ্য প্রোজেরিয়া রিসার্চ ফাউন্ডেশন (পিআরএফ)। এটি বিশ্বের একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যারা প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য কাজ করে।
বাংলাদেশে প্রোজেরিয়া অক্রান্ত শিশুদের শনাক্ত করতে সবার সহায়তা প্রত্যাশা করছে প্রতিষ্ঠানটি। হাচিনসন-গিলফোর্ড প্রোজেরিয়া সিন্ড্রোম (এইচজিপিএস) নামে পরিচিত একটি জটিল রোগ হলো প্রোজেরিয়া। এটি বিরল জেনেটিক রোগের মধ্যে একটি গ্রুপ। যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো বয়সের তুলনায় আক্রান্ত শিশুদের অধিক বয়স্ক মনে হয়।
এ রোগের ফলে শিশুরা গড়ে ১৪ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এ ছাড়াও প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শরীরের বিভিন্ন জোড়া শক্ত হওয়া, স্বাভাবিক বৃদ্ধি না হওয়া, ওজন কমে যাওয়া এবং চুল ও ত্বক বয়স্ক লোকদের মতো হয়ে যাওয়া লক্ষণগুলো দেখতে পাওয়া যায়। ফলে আক্রান্ত শিশুরা জাতিগতভাবে ভিন্ন থাকলেও সবাইকে প্রায় একই রকম দেখায়।
প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বের যে কোনো স্থান থেকে মিডিয়া, চিকিৎসক এবং পরিবারগুলো পিআরএফ-এর ফেসবুক এবং টুইটারে যুক্ত হতে পারেন। প্রয়োজনীয় তথ্যের উৎস হিসেবে এসব সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে যুক্ত থেকে সহায়তার উৎসাহ প্রদান করে পিআরএফ।
পিআরএফ এর প্রেসিডেন্ট এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অড্রে গর্ডন বলেন, আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে আমরা তাদের খুঁজে বের করতে চাই। তাদের শনাক্ত করে চিকিৎসা সহায়তা করাই হলো ‘ফাইন্ড দ্য চিলড্রেন’ ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য। প্রোজেরিয়া একটি জটিল রোগ যা অনেকেই বুঝতে পারে না।
বাংলাদেশ এমন একটা দেশ যেখানে প্রায় ১৬৫ মিলিয়ন বা ১৬ কোটির বেশি লোক বসবাস করে। পরিসংখ্যানগত দিক বিবেচনা করে আমরা মনে করি, প্রায় ১০ জন প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগী এখানে রয়েছে। প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের শনাক্ত করে তাদের চিকিৎসা দেয়া এবং জনসাধারণসহ স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের সচেতন করার জন্য এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেছি।
তাদেরকে চিকিৎসা পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি ক্লিনিক্যালট্রিটমেন্ট ট্রায়ালে অংশগ্রহণের সুযোগ করে বর্তমান অবস্থার উন্নতির জন্য ওষুধের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে তারা আরও দীর্ঘদিন ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে।
পিআরএফ এর মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. লেসলি বি. গর্ডন বলেন, বাংলাদেশে আমরা যখন প্রোজেরিয়া রোগীর সন্ধান পাবো তখনই তারা পিআরএফ এর আন্তর্জাতিক প্রোজেরিয়া রেজিস্ট্রির অংশ হয়ে যাবে। চিকিৎসা সুপারিশ পাওয়ার পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল চিকিৎসা পরীক্ষায় যোগদানের জন্য আমন্ত্রিত হবেন।
বাংলাদেশে প্রোজেরিয়া আক্রান্ত প্রতিটি শিশুকে এই সুযোগ দেয়া হলো আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। প্রয়োজনীয় সকল ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য আমাদের প্রথম কাজ হলো এ সকল রোগী ও তাদের পরিবারকে শনাক্ত করা। প্রোজেরিয়া আক্রান্ত সমস্ত শিশুদের চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। অতএব অনুগ্রহ করে বাংলাদেশে প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করতে আমাদের সহযোগিতা করুন।